পেট খারাপ হলে আপনাকে বেচারা বলে ডাকবে লোকে। মাঝ রাত থেকেই আপনি হয়তো বাঁ হাতটা আর শুকিয়ে উঠতে পারছেন না। গামছাটা গলায় জড়িয়েই রেখেছেন। বেগ পেলেই আরেকবার। কথা বলতে পারছেন না। কাশতে ভয় করছে। হাঁচি যেন না আসে। বসতে সুবিধা হচ্ছেনা। উঠতে গেলে অসুুবিধা। কিছু খেতেও ভয় করছে। এইরকম অবস্থায় না পড়লে আপনি বুঝবেন না ব্যাপারটা কিরকম ভয়ঙ্কর। এত সবের মধ্যে আপনি একটাই কাজ মন দিয়ে করে যাচ্ছেন। বেগ সামলাচ্ছেন। যাচ্ছেন। আসছেন। আবার যাচ্ছেন। অন্যান্য মানুষের কাছে আপনি তখন একজন বেচারা। পেটখারাপ হলে মানুষের সিমপ্যাথি পাবেন না।
না। আমার পেট খারাপ হয়নি। আমি ‘বেচারা’ বোঝাতে এতটা ধানাইপানাই করলাম। নাগপুরের সূত্র অনুযায়ী দেশের ‘দিশা’ ঠিক করে দেওয়ার জন্যে ‘মোদি প্রয়োগ’ করা হয়েছিল। প্রথানমন্ত্রীর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁকে ‘নীরব মোদি’ বানিয়ে রাখার নাগপুরী আদেশ দেখে আমার তো তাঁকে বেচারা বলতে ইচ্ছে করছে। দিশা ঠিক না হলেও দশা তো দেখাই যাচ্ছে। বডি ল্যাঙ্গুয়েজ চেঞ্জড। ফ্যালফ্যাল করে তাকানো। নাক চুলকানো। মাথা চুলকানো। উনি কাশতেও পারছেন না। আবার হাঁচতেও পারলেন না। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করছেন প্রধানমন্ত্রীকে। উত্তর দিচ্ছেন অন্য কেউ। পেটখারাপের রূগীর মতোই শুকনো তালের বড়ার মতো মুখ। কথাও বলতে পারছেন না। কেন!
কেন? প্রধানমন্ত্রী কেন জবাব দিতে পারবেন না? পাঁচ বছরে এটাই তো ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন। পাশে প্রধানমন্ত্রীকে বসিয়ে কেন কোন পার্টির সভাপতির কাছ থেকে দেশের সম্বন্ধে জানতে হবে? ভারতীয় রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে একটা জটিল প্রশ্ন আসতে বাধ্য। প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে পার্টির সভাপতি বড় হয় কি করে? তাহলে কি স্বৈরতন্ত্র চলছে! আমরা যাকে স্বৈরতান্ত্রিক ভাবি তিনি কি তাহলে একজন অভিনেতা মাত্র? তন্ত্রের টিকি তাহলে কি অন্য কোথাও বাঁধা?
না। আমার পেটখারাপ না হলেও মাথাটাই মনে হয় খারাপ হয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রীকে 'বেচারা' বলা ঠিক হচ্ছে না। এত প্যাঁচের কথা মাথায় আনাও ঠিক নয়। মাথাখারাপ হলে এমনিই হয়। তিল কে তাল দেখা যায়। সর্ষের মধ্যেই ভূত দেখতে পায়। রজ্জুতে সর্পভ্রম হয়। তবে বেশ কয়েকদিন মিডিয়ার উইন্ডো খুলে দেশের রাজনৈতিক শপিং মলে ঘোড়ার কেনাবেচা দেখতে হতে পারে। মোদিজিকে এত তাড়াতাড়ি বেচারা বলা ঠিক হবে না। এত তাড়াতাড়ি উনি ‘ঝোলা’ গুটিয়ে ফিরতে পারবেন না। দেখা যাক কি হয়! এবার তবে 'মোদি বিয়োগ নাকি আবার 'মোদি প্রয়োগ'।