Mamata and Jairam |
এখন হাতে আছে ১৮০০ কোটির কিছু বেশি টাকা। হুজুগে এই সরকার কয়েকদিন আগে এত টাকা দেখে বলে দিয়েছে এক্ষুণি ৬০০ কোটি টাকা খরচ করে ফেলতে হবে! জুয়া খেললেও এত টাকা ওড়াতে সময় লাগে। ১০০ দিনের কাজ করিয়ে এত টাকা খরচ করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। টাকা উড়ছে না খরচ হচ্ছে? কে জানে ভাই!
এদিকে আবার ২০০ দিনের কাজের সাফল্য নিয়ে রাজ্য সরকার নিজেদের জন্যে একটা রেজাল্ট তৈরি করছে। ঠিক এই সময়ে ১০০ দিনের (MNREGA) কাজের রেজাল্টে যে বর্তমান সরকার গোল্লা পেয়েছে তা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর চিঠি থেকেই স্পষ্ট। নিজেই পরীক্ষা দিয়ে নিজেই খাতা দেখলে যে কেউ ‘ফুল মার্ক্স’ পেয়ে যাবে। মমতা ব্যানার্জি পরীক্ষা না দিয়ে নিজেই ফুল মার্ক্স চড়িয়ে দিয়ে মার্ক্স শিটটা প্রেসে পাঠিয়ে বসে আছেন। প্রেস থেকে ছেপে বেরোলেই একেবারে হৈ চৈ ফেলে দেওয়ার ফন্দি! চাটুকার খবরের কাগজগুলো অপেক্ষা করছে ২০০ দিনের কাজের রেজাল্টের জন্যে। গোল্লায় যাক গ্রামের উন্নয়ন। তাতে তোর কি? দশ বছর চুপ থাক তোরা। গ্রামোন্নয়ন যে গোল্লায় যাবে পঞ্চায়েতের কাজের মধ্যে মমতার ‘পঞ্চায়েতি’ দেখলেই বোঝা যায়। পঞ্চায়েতের মাথার ওপর ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার। তার মাথায় মহকুমা শাসক। তার মাথায় জেলা শাসক। সবার মাথার ওপর মমতাময়ীর হাত। পঞ্চায়েতের ক্ষমতা কেড়ে নিতেই যে ত্রিস্তর কমিটি গঠন হল সে কথা তৃণমূলের শরিক দলও বলছে। ক্ষমতা কমিয়ে দিয়ে রাজ্য সরকার পঞ্চায়েতকে ঠুঁটো জগন্নাথ করে ফেলতে চাইছে। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ করে মমতা গুটি পায়ে উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন। ১০০ দিনের কাজের গতি থেমে যাওয়ার পক্ষে এইরকম খামখেয়ালিপনাই যথেষ্ট।
শরিক কংগ্রেসের জ্বালা বেশি। যখন তখন আনতাবড়ি বিরোধিতা করে তৃণমূল সস্তার রাজনীতি করছে। কখনো FDI নিয়ে প্যাঁচ মারছে। আবার কখনো পেট্রোলের কারবারে জল ঢেলে দিচ্ছে। এবার নাকি মমতা পেনশন ফান্ড বেচে দেওয়ার বিরোধিতা করবেন! মমতা এখন নাকি সবচেয়ে বড় বামপন্থী! অথচ কেন্দ্রে মন্ত্রিত্বের সুবাদে তৃণমূল যে পেট্রোলকে নিয়ন্ত্রণমুক্ত করল সে আর কে বোঝে! পেনশন ফান্ড বেচে দিতে তৃণমূলও যে রাজি হয়েছে সে আর কাকে বোঝানো যায়! মমতা মাঝে মধ্যেই বলে ফেলছেন কেন্দ্র সরকার থেকে সরে আসবেন! কংগ্রেসের শিরে সব্বোনাশ! আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে মমতা যে বিজেপির দিকে ঢলে পড়তে পারেন, ইতিহাস সাক্ষী রেখে তাও বলা যেতে পারে। এদিকে রাজ্যে মমতা যে একাই ‘ঘর’ সামলাতে পারবেন সে কথা তিনি শরিক দলকে আগাম জানিয়ে রেখেছেন। তাই এখন দায় বেশি কংগ্রেসের। কেন্দ্রে সরকার চালাতে গেলে মমতার লাথি ঝাঁটা সহ্য করতে হবে এইটা কংগ্রেসের মতো দলটি ভাল করেই জানে। যতদিন পারা যায় দেশটাকে লুটেপুটে চেটেপুটে ছিবড়ে বানানোর জন্যে মমতার লাথি ঝাঁটা সহ্য করতে হবে বইকি!
কিন্তু তা বলে কি চিমটি কাটা যাবেনা! মেরেছ কলসীর কানা, তা বলে কি প্রেম দেব না? তা হয় নাকি! একটু আধটু খুনশুঁটি তো ‘ঘর’ করতে গেলে হতেই পারে। নইলে কংগ্রেসের মধ্যেই গেল গেল রব উঠবে। জয়রাম রমেশের চিঠিটি তাই ‘পত্রবোমা’ নয়। রাজ্যে বোমা পড়লে একটি মাত্র খবরে কাগজেই তা ছাপে নাকি! এ কেমন বোম রে ভাই! এর যে কোন শব্দ নাই! তাই বোমা না বলে চিমটি বলাই ঠিক হবে। বর্তমান রাজ্য সরকারকে একটি ছোট্ট চিমটি কেটেছেন জয়রাম রমেশ থুক্কুরি, চিমটি কেটেছে কংগ্রেস। তাই তো খবরের কাগজগুলি ব্যাপারটা না ছেপে বেমালুম চেপে গেছে।