Flickr Gallery

Tuesday, November 27, 2018

অযোধ্যায় এবার আমার আফিম খাওয়ার মতো অনুভূতি হল


পুরী গিয়ে সাহেবদের সঙ্গে চায়ের দোকানে বসে মটর দানার মতো এক টুকরো আফিম চুষতে চুষতে চা না খেলে আফিমের গুণ সম্পর্কে আমার কোনদিন অনুভূতি হত না। সেই দিন আফিম খেয়ে নেশার ঘোরে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম আমার বগলের তলায় লোমফোঁড়ার ব্যথাটা। ঘোর কাটতে না কাটতে আবার ব্যথা শুরু হয়ে গেল। ব্যথা ভোলার জন্যে আবার দৌড়লাম সেই চায়ের দোকানে।

অযোধ্যার ধর্মীয় সভায় যারা যোগ দিতে এসেছিল তাদের সবাইয়ের কোথাও না কোথাও একটা করে ফোঁড়া ছিল। চায়ের দোকানে শুনলাম এক চাষীর মুখে এবার আলুর দাম পাচ্ছেনা। কিন্তু চায়ের ভাঁড় ফেলে সভাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সময়ে সেই চাষা হঠাৎ উর্ধ্ববাহু হয়ে চিৎকার করে উঠল, “মন্দির ওঁহি বানায়েঙ্গে।” আলুর দুঃখ বেমালুম চাপা পড়ে গেল লোকটার বাজখাঁই আওয়াজে।

আরেক ছাপোষা চাষা। তিন বিঘে জমিতে আঁখ ফলিয়ে গোঁফে তা দিতে দিতে ট্রাক্টারে করে মাল নিয়ে বাজারে গিয়ে দাম না পেয়ে রাগ করে সব আঁখ রাস্তায় ফেলে রাস্তা জাম করে পুরো বাজারের বেচাকেনা বন্ধ করে দিয়েছিল সেদিন। চায়ের ভাঁড় মাটিতে ফেলে সেও ঝটপট উঠে “জয় শ্রীরাম” হাঁক পেড়ে হাঁটা দিল সভাস্থলের দিকে। মন্দির হয়ে গেলেই নাকি আঁখের দাম পেয়ে যাবে, এই ভরসাতেই বেঁচে আছে চাষাটা।

এবার সত্যিই এক লোমফোঁড়া পাবলিক দেখলাম। রাস্তার ধারের এক হাতুড়ে ডাক্তারের দোকানে কাতরাতে কাতরাতে পাছার লোমফোঁড়ার পুঁজ বের করাচ্ছিল। ওমা, রাস্তা দিয়ে “জয় শ্রীরাম” ডাক শুনে গলা ফেড়ে নিজেও ডেকে নিল জয় শ্রীরাম। রাম ঠাকুরের মহিমা দেখে আমিও তাজ্জব! ফোঁড়ার ব্যথা বেমালুম ভুলে গেছে লোকটা।

সেই কবে কে একজন বলেছিল, “ধর্ম আফিমের মত।” মালটা মনে হয় ঠিকই বলেছিল। আমার লোমফোঁড়াটা যদি আমার কষ্ট হয়, তবে আফিম ছিল ধর্ম। আফিম খেয়ে আমি কষ্ট ভুলেছিলাম। এবার অযোধ্যা গিয়ে শিবসেনা আর বাকি সব রকম ধর্মীয় সেনার সেপাই পেয়াদাদের দেখে সেই মহাপুরুষের মূল্যবান কথাটা আবার মনে পড়ে গেল। তবে কে য়ে কথাটা বলেছিল কিছুতেই শালা মনে করতে পারছিনা। আমাদের পাড়ার জগাদার পিসেমশাই অনেক ভাল ভাল কথা বলত। সেই মালটাই এই দামি কথাটা বলেছিল হয়তো।

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM