Flickr Gallery

Friday, October 4, 2013

মহাভারতের খানাপিনাঃ বৃক্ষ


খাই খাই কর কেন এসো বসো আহারে, খাওয়াবো আজব খাওয়া ভোজ কহে যাহারে। মহাভারতেও এই রকম বাহারে খাবার বর্ণনা পাওয়া যায়। বিভিন্ন দেশের খাওয়া যেমন বিভিন্ন রকমের হয় তেমনি মহাভারতের আমলের আলাদা আলাদা বর্ষে ও দ্বীপে খাওয়ায় বৈচিত্র‍্য লক্ষ্যণীয়। বর্ণনা থেকে পাওয়া যায় দ্বীপ অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের বৃক্ষ ছিল। সেই বৃক্ষের ফল, রস ইত্যাদি খেয়ে দ্বীপবাসীরা জীবনধারণ করতেন। ফল, ফলের রস, পাতা, পাতার রস ইত্যাদি নানারকম পদ ছিল তাঁদের মেনুতে।
পৌরাণিক কবিরা ভূগোল বর্ণনার সময়ে লিখেছেন, জম্বুদ্বীপে, মতান্তরে যাকে এশিয়া বলা হয়, বিখ্যাত জম্বু বৃক্ষ ছিল, যার ফল ও ফলের রস খেয়ে ওই দ্বীপের বাসিন্দারা জীবিত থাকতেন। ইলাবৃত বর্ষ বলে এক অঞ্চল ছিল। সেই অঞ্চলের বাসিন্দারাও জম্বু ফল ও তার রস খেতেন। কেতুমাল বর্ষে এক দিব্য কাঁঠাল গাছ ছিল। দিব্য বৃক্ষ মানে বলতে পারেন প্রচুর পরিমাণে ফল ধরত তাতে। সারা বছর কাঁঠাল ফলে থাকত। কাঁঠালভক্ত দ্বীপবাসীরা কাঁঠাল ভক্ষণ করে মহানন্দে জীবনযাপন করতেন। হরিবর্ষের নাগরিকগণ আঁখের রস খেতেন। শৃঙ্গবান পর্বতে ক্ষীরি নামের একটা গাছ ছিল। আশ্চর্য গাছ! একেবারে কল্পতরু। সেই গাছ থেকে ছয় রকমের রসক্ষরণ হত। ওই গাছের ফল থেকে কাপড় তৈরি হত। শিমূল, রাবার, তাল, খেজুর ইত্যাদি গাছের শঙ্করায়ণ করে যদি কোন গাছ পাওয়া যায় তবে ক্ষীরি বৃক্ষের সমতূল্য হতে পারে। নাগরিকগণ সুখী থাকতেন এবং বহুকাল বাঁচতে পারতেন। ভদ্রাশ্ব বর্ষের জনগণ কালাম্র বৃক্ষের ফল ও রস খেয়ে জীবিত থাকতেন। রমণক বর্ষে ছিল রোহণ নামের বটবৃক্ষ। ওই দেশের মানুষ বটফল ও বটরস খেয়ে বেঁচে থাকতেন। হিরণ্বক বর্ষে ছিল লকুচ গাছ। লকুচ ফল ও তার রস খেয়ে নাগরিক জীবিত ছিলেন। শাল্মল দ্বীপের মানুষ শিমূল গাছের ফুল খেতেন। তাঁরা ওই গাছের ফল দিয়ে বস্ত্র তৈরি করতেন। তবে সমস্ত বর্ষের বৃক্ষরাজির মধ্যে বলা হয়ে জম্বুফল ও তার রস সবচেয়ে উৎকৃষ্ট।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM