Flickr Gallery

Tuesday, December 25, 2012

সান্তাক্লজ বাংলার দিকে চেয়েছেন বলেই মনে হচ্ছে


শোনা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্পমন্ত্রী মহাকরণের ধারের কোন এক ল্যাম্প পোস্টে পেল্লাই একটা মোজা ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। রাতের বেলায় এসে সান্তাক্লজ সেই মোজার মধ্যে ‘ইন্ডাস্ট্রি’ ঢুকিয়ে গেছেন। সুতরাং রাজ্যে শিল্প সম্ভাবনা উজ্জ্বলতর হয়ে উঠল। শিল্প আসছেনা বলে যারা এতদিন হইচই করছিল তাদের মুখে সান্তাবাবু এসে চুনকালি মাখিয়ে দিলেন। মাত্র দেড় বছরের মধ্যেই সান্তা বাংলার ওপর এত সদয় হলেন কেন এই প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীকে করার জন্যে ফেসবুকের শরণাপন্ন হলাম। তবে ফেসবুকেও তিনি কোন উত্তর দিতে পারলেন না। তিনি ফেসবুকের পাতায় গুটিসুটি মেরে এমন ভাবে বসে আছেন যে তাঁকে খোঁজাই মুশকিল হয়ে পড়েছে।

মাঝে মাঝে লাফ দিয়ে বেরিয়ে তিনি তাঁর বাণী ফেসবুকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সবার জন্যে শুভ কামনা জানিয়ে তিনি ফেসবুকেই জানিয়েছেন মোজার মধ্যে সান্তাবাবু যে শিল্প ঢুকিয়ে গেছেন তাতে তিনি অভিভূত। তাঁর অনুচররা এর ফলে অত্যন্ত আহ্লাদিত হয়েছেন। এইবার রাজ্যে শিল্পের জয়ঢাক বাজবে বলে আবার শিল্পমন্ত্রী দাবি করছেন। শিল্পমন্ত্রীর আরও দাবি বিনা জমিতে কিভাবে শিল্প করতে হয় তা এই সরকার দেখিয়ে দেবে। বিরোধীদের চোখ ট্যারা করে দেবে এই সরকার। তিনি তাঁদের দলনেত্রীর ভূয়ষী প্রশংসা করে জানিয়েছেন, ওই মহাময়ী বাংলায় না এলে সান্তাক্লজও বাংলার মাটিতে পা রাখতে সাহস করতেন না। ৩৪ বছর ধরে বাংলায় যে অরাজকতা চলেছে তার ফলে সান্তার মতো পর্যটকরা বাংলায় আসতে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। তিনি আরও বলেছেন, এবার থেকে সান্তাক্লজকে পর্যটন শিল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করে ভবিষ্যতে শিল্পের হাত ধরে বাংলাকে জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন পাইয়ে ছাড়বেন। 

সান্তাক্লজকে খুশি করার জন্যে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখতে চায়নি এই সরকার। বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই পার্কস্ট্রিট অঞ্চলে অনেক অনেক সান্তারূপী বহুরূপী ভাড়া করে ছাড়া হয়েছিল। তাঁরা পথচারীদের সঙ্গে রসিকতা করেছেন। আমুদে পথচারী বিনোদন অনুভব করেছেন। তবে তাঁরা ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেননি যে বড়দিনে রাতদুপুরে মোজার মধ্যে সান্তাবাবু এইভাবে শিল্প ঢুকিয়ে দিয়ে যাবেন। 

সান্তাক্লজ বাংলার ওপর সদয় কেন? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন খবরের কাগজের মহলে। অনেক মহলের ধারণা FDI নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মন জয় করতেই নাকি সান্তাক্লজকে মহাকরণের মোজায় শিল্প ঢুকিয়ে যেতে বলেছেন খোদ ওয়ালমার্ট। সান্তাক্লজকে সঙ্গে নিয়ে একটা কমিটি তৈরি করার জল্পনা তুঙ্গে। শোনা যাচ্ছে সেই কমিটিতে লাল সাদা পোশাক ও টুপির বদলে নীল সাদা পোশাক পরিয়ে অধুনা কর্মহীন এবং চেয়ার বিশেষজ্ঞ শ্বেতপ্রসন্নবাবুকে চেয়ারম্যান মনোনীত করা হবে। শিল্পের সুখস্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে সান্তাক্লজের সঙ্গে আলোচনা করে বিনা জমিতেও ঠিক কোন জায়গায় শিল্প করা যাবে সেই দিকটির ওপরই গুরুত্ব দেওয়া হবে। এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতাকে প্রশ্ন করা হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, টাটা গেলেন। আধুনিক গেল। লার্সেন-টুব্রো গেল। কাটোয়া গেল। আরও কত যাচ্ছে। এইবার আপনাদের মুখে শুনছি সান্তা আসছেন। সান্তাই যদি শিল্প আনতে পারেন আমাদের কোন আপত্তি থাকবেনা। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে গেলে সান্তাকে ডাকলে ভালই হবে মনে হচ্ছে।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM