Flickr Gallery

Monday, December 17, 2012

সিপিএম আর তৃণমূল কংগ্রেস সমান, আমরা অসমান


রাজনীতি বড় বিটকেল বস্তু। কখন কি বলতে হবে তা না জানা থাকলে খাদ্য হতে দেরি লাগেনা। রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী মুখ ফসকে বলেই দিলেন ২০১৬-র পর তাঁরা আর থাকছেন না। ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গেই তিনি একটি সংবাদমাধ্যমের  একদিনের খাদ্য হয়ে গেলেন। আমার কথা বিকৃত করে চ্যানেলে দেখানো হয়েছে। তিনি বলেছিলেন ২০৫৬ পর্যন্ত থাকবেন। ২০১৬ কি ২০৫৬ সে তো সময় বলবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও অনেকবার খাদ্য হয়েছেন। কিন্তু তিনি বাঘের বাচ্চা বলে কেউ খুব একটা ঘাঁটাচ্ছেনা। মাথার ব্যামোর দোহাই দিয়ে তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন। দরকার পড়লে তিনি রাবণ হয়ে যাবেন বলেছেন। রাজ্যের সব মন্ত্রীই মুখ খুললেই খাদ্য হয়ে যাচ্ছেন। তাই এবার এসএমএস করে মন্ত্রীদের খাদ্য হতে বারণ করা হয়েছে।

কিন্তু ফাঁকতালে কংগ্রেস নিজেদের গুছিয়ে নিতে চেষ্টার ত্রুটি রাখতে চাইছেনা। বনেবাদাড়ে পাহাড়ে জঙ্গলে দলটি এখন মিটিং মিছিল করে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে আদাজল খেয়ে লেগেছে। তৃণমূলের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর কিছুদিন ক্ষমতা ভাগ বাঁটোয়ারা করে খোশমেজাজে ছিল দলটা। কিন্তু রাজ্যের ‘বামপন্থী’ মুখ্যমন্ত্রী FDI বিতর্কে দুম করে কেন্দ্র সরকার থেকে সরে আসার পর বাধ্য হয়ে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যেও সম্পর্ক বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ফেলে এখন মুখ খুলছে। FDI যদি খুচরো ব্যবসায়ে চলে আসে তবে পশ্চিমবঙ্গে নীল সাদা রঙের বরাত হয়তো ওয়ালমার্টের মতো কোন বড় দোকানদার পেয়ে যাবে। তবে ছোট দোকানদারকে উপোস করতে হবে। তাই রাজ্যে FDI ঢুকতে দেওয়া চলবেনা। গরীবদের স্বার্থ দেখতে হবে। এইরকম ন্যায্য কারণ দেখিয়ে তিনি অকারণে কেন্দ্র থেকে সরে এসে ফাঁপরে পড়েছেন। 

কংগ্রেসের রাজনীতিও বড় বিচিত্র। এত পুরোন একটা দল। এত অনুভব। এই দলটাই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়ল। এখন বিচ্ছেদপর্ব চলছে। তাই এই দলের নেতারা বলছেন, তৃণমূল আর বামেদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। যেমন ছিল বামেরা। তেমনি হয়েছে তৃণমূলীরা। এ পিঠও যা, ওপিঠও তাই! বিচিত্র দল। এদের অনুভূতিও বিচিত্র! এত দিন ধরে কেন্দ্রের শাসক। কিন্তু তৃণমূল আর বামেরা যে সমান সেটা এতদিন বুঝতে পারেনি। কেন্দ্রে এবং রাজ্যে ক্ষমতা ভাগ বাঁটোয়ারা করে নেওয়ার সময়েও বুঝতে পারেনি। গত এক দশক ধরে বুঝতেই পারেনি। দুমাসের মধ্যেই কংগ্রেস দলের সব নেতারা সমস্বরে চেঁচিয়ে চ্যানেল মাৎ করে বারবার একই কথা নামতার মতো বলে যাচ্ছেন, সিপিএম আর তৃণমূল সমান। যা সিপিএম করে গেছে, তৃণমূল ঠিক তাই করছে। আগেও আরাজকতা ছিল। এখনও অরাজকতা চলছে। দুর্নীতি ওরাও করত। এরাও করছে। গণতন্ত্র তখনও ছিলনা, এখনও নেই। 

তাই কংগ্রেসের নেতারা হঠাৎ ভুঁইফোড়ের মত গজিয়ে উঠে বনেবাদাড়ে মিটিং মিছিল শুরু করে দিয়েছেন। যেখানে সেখানে গিয়ে নিজেদের জন্যে শক্তপোক্ত মঞ্চ তৈরি করে হুড়মুড়িয়ে বড় নেতা, ছোট নেতা সবাই মিলে মঞ্চে উঠে হাত নাড়ছেন। মানুষের কাছে নিজেদের অস্তিত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। ভুলে যেওনা ভায়া। আমরাও আছি। এইবারটা আমাদের একটা ‘চান্স’ দিও। সিপিএম আর তৃণমূল সবাই সমান। আমরা একটু অসমান। আমাদের দিকে তাকিয়ে একটু ‘ব্যালেন্স’ করে দিও। রাজনীতি বড়ই বিচিত্র। কখন কি বলতে হয় কংগ্রেস তা জানে। তাই এত তাড়াতাড়ি খাদ্য হয়ে যায়না।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM