খবরে প্রকাশ বিধায়কসহ নেত্রী ও অভিনেত্রীসহ কুকুরপ্রেমী দেবশ্রী রায়কে রাস্তায় কুকুর কামড়েছে। অভিনেত্রীর অত কাছে এসে কুকুর কিভাবে কামড়াল এই বিষয়ে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থেকে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে দলনেত্রী সহ অভিনেত্রীর নিরাপত্তা নিয়েও। প্রসঙ্গক্রমে বলাবাহুল্য, কিছুদিন আগে জগদ্ধাত্রী ঠাকুর পুজোর উদ্বোধনী ভাষণে নিরাপত্তার বেড়া টপকে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে একটা মুখপোড়া হনুমান মুখ্যমন্ত্রীকে দাঁত মুখ খেঁচানোর পরও হনুমান সহিষ্ণু মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে তাকে বিস্কুট খাওয়ানো হয়েছিল। শাসকদলের অভিনেত্রীকে কুকুর কামড়ানোর পর কিন্তু কুকুরটিকে বিস্কুট দেওয়া হয়নি। কলকাতার কুকুরকূল বরং প্রতাড়নার স্বীকার হতে চলেছে।
সংবাদপত্রে বলা হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে কুকুরের ‘নাসবন্দী’ করার দায়িত্ব সামলাচ্ছিল কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্যের বাম সরকার এবং পুরসভা। তার সঙ্গে চার-পাঁচটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও এই কাজে পারিশ্রমিক নিয়ে সাহায্য করছিল। কিন্তু নতুন পশুপ্রেমী সরকারের আবির্ভাবের ফলে ২০১১ সালের নভেম্বর মাস থেকে কুকুরের নির্বীজকরণ বাবদ প্রাপ্য বকেয়া টাকা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে না মেটানোর দরুণ এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। তার ফলে রাস্তার কুকুরের সংখ্যাধিক্য লক্ষ্যণীয় হয়ে ওঠে। আউল ওয়াচের রাজনৈতিক মহল মনে করছে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ‘জাস্টিস কাটজু’কে রাস্তার কুকুর বলার পেছনে বর্তমান শাসকদলের পশুপ্রেম কিংবা কুকুরপ্রেম প্রকাশ পেয়েছে।
কিন্তু শাসকদলের পশুপ্রেমে বাদ সেধেছেন শাসকদলেরই অভিনেত্রীসহ নেত্রী দেবশ্রী রায়। তাঁকে কুকুরে কামড়েছে। তাই কুকুরের পুনরায় নাসবন্দী ত্বরাণ্বিত করতে পুরসভার হঠাৎ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। বলা যায়না, শেষে দংশনপীড়ায় দগ্ধ হয়ে অভিনেত্রী দলের বিরুদ্ধে কিছু বলে ফেললে পুনরায় কুকুর কেলেংকারির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেনা শাসকদলের রাজনৈতিক মহল।
প্রাক্তন সরকারের আমলে কুকুরপিছু নাসবন্দী বাবদ খরচ হত ৪৪৫ টাকা। কিন্তু বর্তমান সরকারের সব কিছু ‘ফাটাফট সটাসট’ চাই। তাই একটি ২৫ লক্ষ টাকার মেশিন কিনতে চেন্নাইতে লোক পাঠানো হয়েছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে ওই মেশিন চালানোর মতো দক্ষতা পুরসভার কর্মচারীদের না থাকলেও হবে। মেশিনের ওপর চ্যাংদোলা করে কুকুরকে চাপিয়ে দিলে নিজে নিজেই সব হয়ে যাবে। কয়েকজন মেয়র পারিষদ বলাবলি করছেন কলকাতার সব কুকুরকে একসঙ্গে ধরে এনে মেশিনের ওপর তুলে ধরে বোঁ করে মেশিনটা এক প্যাঁচ ঘুরিয়ে দিলেই কেল্লা ফতে। ফটাফট সব হয়ে যাবে।
কিন্তু ওই যে বললাম, উন্নয়ন সহ্য হচ্ছেনা। একশ্রেণীর সংবাদমাধ্যম এই মেশিনেও ‘ত্রিফলা’ দেখবে বলছে। প্রশ্ন তুলেছে, এত তাড়াতাড়ি মেশিনের বরাত দিতে টেন্ডার ডাকা হচ্ছে কেন? আগের মতো উপায় লাগু হচ্ছে না কেন? বলা হচ্ছে, ল্যাপারোস্কোপিক ওই যন্ত্রের মাধ্যমে কতগুলি কুকুরের নির্বীজকরণ সম্ভব সেটাই এখন সংবাদমাধ্যমটির রাজনৈতিক মহল লক্ষ্য রাখবে।