Flickr Gallery

Monday, November 21, 2011

জ্ঞানেশ্বরী কান্ড ও রাণী মমতার মিথ্যাচার


“হে হুতোম আপনি সর্বকালজ্ঞ ও সর্বাজ্ঞানী প্রবাদপ্রতিম মহাপুরুষ। আপনি আমাদিগের নিকট জ্ঞানেশ্বরী অন্তর্ঘাতকান্ড বর্ণনা করুন এবং কি কারণে রাণী মমতা মিথ্যাচারী উপাধিভূষিত হইয়াছিলেন তাহাও বর্ণনা করুন।” এই বলিয়া রাজা জনার্দন দুইহস্ত একত্রিত করিয়া মুখগহ্বরে প্রবিষ্ট করিয়া হুটাহুট নামক সুতীক্ষ্ণ শব্দবাণ নিক্ষেপ করিলে সভাস্থলে ফরফর বায়ুসহযোগে পন্ডিত হুতোম আবির্ভূত হইলেন।

“পুরাকালে সমগ্র বিশ্বে  সহস্রাধিক চক্রযুক্ত ধাতব সরীসৃপে উপবিষ্ট হইয়া প্রজাগণ ভ্রমণ করিতেন। বঙ্গবর্ষসহ সমগ্র ভূভারতেও এই যানবাহিত হইয়া মানবকূল দূর হইতে দূরান্ত গমনাগমনে সক্ষম ছিলেন। কোলকাতা জনপদ হইতে মুম্বই জনপদের সুদীর্ঘপথে জ্ঞানেশ্বরী নামক একটি সরীসৃপ বিচরণ করিত। মাওবাদী নামক একটি জনজাতি একদা গ্রীষ্মকালে বুদ্ধপূর্ণিমার মধ্যরজনীতে এই সরীসৃপশকট ও তাহাতে উপবিষ্ট সমগ্র্ ভ্রাম্যমাণ প্রজাকূলকে ধ্বংস করিবার নিমিত্ত অন্তর্ঘাত করিয়াছিল।”
“মাওবাদী প্রজাতিটি ভারতবর্ষে নিষিদ্ধ প্রজাতি রূপে গণ্য হইত। ইহারা অরণ্যে ও গুহা কোন্দরে লুক্কায়িত থাকিত। এবং সাধারণ ও দুর্বল প্রজাগণের উপর সুযোগ অনুসন্ধান করিয়া অগ্নিবর্ষণ ও অত্যাচার করিত। ইহাদের অবস্থান অরণ্যে হইলেও ইহারা স্বীয় শাখাদি বিস্তার করিয়া জনসমক্ষে আবির্ভূত হইতে সক্ষম ছিল। ইহাদের একটি শাখার নাম ছিল পিসিপিএ কমিটি। প্রজাগণের নিকট ইহা শুধুমাত্র কমিটি নামেই কুখ্যাত হইয়াছিল। কদাচারী রাণী মমতাও মাওবাদী ও কমিটিকে একই বংশোদ্ভূত ভাবিতেন এবং কমিটিকেও মাওবাদী বলিয়া সম্বোধিত করিতেন। জ্ঞানেশ্বরী অন্তর্ঘাত কান্ডের পরমুহূর্তে মিথ্যাচারী মমতা সরবে কহিয়াছিলেন ইহাতে তাঁহার আত্মীয়স্থানীয় প্রজাতির কোন দোষ দৃষ্ট হয়না। ইহা সিপিএমের দ্বারা সংঘটিত হইয়াছে।”
“মিথ্যাচারী রাণী মমতার রাজ্যাভিষেকের কিয়দকাল পূর্বে অন্তর্ঘাতমাসে মাওবাদী প্রজাতির কমিটিশাখা দ্বারা এইরূপ কুকার্য সংঘটিত হইয়াছিল। অন্তর্ঘাতমাসে মমতা ভারতবর্ষের মন্ত্রী ছিলেন এবং সরীসৃপশকট বিভাগটি তাঁহার কুক্ষিগত ছিল। কথিত আছে তাঁহার নিকটাত্মীয় মাওবাদী প্রজাতি ও মাওবাদী প্রজাতির একটি শাখাগোষ্ঠী অর্থাৎ কমিটির যৌথ চক্রান্তে এইরূপ নাশকতামূলক অসংখ্য ঘৃণ্যকার্যাদি সংঘটিত হইত এবং জ্ঞানেশ্বরী কান্ড এইপ্রকার বহু কান্ডের একটি উদাহরণ মাত্র। কদাচারী ও মিথ্যাচারী মমতা স্বীয় দোষ লাঘব করিবার নিমিত্ত এবং কুস্বভাবের বশীভূত হইয়া এই ঘৃণ্যকার্যকে সিপিএম জনগোষ্ঠীর স্কন্ধারোপণ করিবার নিমিত্ত সর্বদা প্রচেষ্টারত থাকিতেন। অন্তর্ঘাত হইবার পরমুহূর্ত হইতেই তিনি সিপিএম জনগোষ্ঠীর দোষ মিথ্যানুভব করিলেন এবং মহাকলরবে তাঁহার পুচ্ছাবলম্বী স্বল্পসংখ্যক গোষ্ঠীর মাধ্যমে শঙ্খনিনাদ সহযোগে এইরূপ প্রচার করিতে তৎপর হইলেন। সিপিএম জনগোষ্ঠী সুবিবেচক ছিল। তাহারা গণনা ও অনুসন্ধান দ্বারা অন্তর্ঘাতকারী অন্সুরদের উৎস ও চরিত্র চিত্রাঙ্কিত করিয়া জনসমক্ষে প্রচার করিয়াছিল যে উক্ত ঘৃণ্যকার্যাদি কমিটির দ্বারাই ঘটিয়াছে। পরবর্তীকালে ভারতবর্ষের সিবিআই বিভাগ উহাদের সঘন গণনা ও অনুসন্ধানদ্বারা অন্তর্ঘাতকারী অন্সুরদের চিহ্নিত করিল। তৎক্ষণাত মিথ্যাচারী মমতা উচ্চৈঃস্বরে দশদিক বিদীর্ণ করিয়া কহিতে লাগিলেন যে তাঁহার পূর্বানুমান সঠিক হইয়াছে। উক্ত ঘৃণ্যকার্য মাওবাদী ও সিপিএমের যৌথ উদ্যোগেই সংঘটিত হইয়াছে।”
“সিবিআই বিভাগটি যে অনুসন্ধান করিয়াছিল তাহাতে মাওবাদী প্রজাতির বর্ণনা ছিলনা। উহারা কমিটিকেই দোষী সাব্যস্ত করিয়াছিল। অথচ রাণী মমতা কমিটির নামোচ্চারণ না করিয়া তাঁহার নিকট আত্মীয়  মাওবাদী প্রজাতিটিকেই দোষী চিহ্নিত করিয়াছিলেন। ইহাতে কোন সন্দেহের অবকাশ ছিলনা যে উক্ত ঘৃণ্যকার্য কমিটিদ্বারা ঘটিত হইলেও মমতার গোচরে যাহা মাওবাদী তাহাই কমিটি রূপে গণ্য হইত। সেই হেতু তাঁহার নিকট আত্মীয়ের শাখা প্রশাখাকে তিনি মাওবাদী বলিয়াই সম্বোধন করিতেন। হে বৎস্য, রাণী মমতার সহস্রাধিক মিথ্যা সংবাদের ইহা একটি উদাহরণ মাত্র। আপনার নিকট আমি আবির্ভূত হইয়া কদাচারী রাণীর মিথ্যাচার ও কদাচারের কাহিনী বর্ণিত করিলে আপনার জ্ঞানবর্ধন হইবে ও সুশাসক রুপে রাজকার্যাদি সঞ্চালন করিবার বাসনা জাগ্রত হইবে।”
এইরূপ বর্ণনা করিয়া হুতোম পন্ডিত পক্ষবিস্তারপূর্বক ঘাটশিলার অরণ্যের সুউচ্চ বৃক্ষাসীন হইলেন। রাজা জনার্দন পন্ডিত হুতোমকে প্রণাম জ্ঞাপন করিয়া সভাত্যাগ করিলেন।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM