Flickr Gallery

Thursday, December 27, 2012

এবার সবাই মিলে রাজজ্যোতিষী শ্রীনিমাইকে স্মরণ করুন


খবরে প্রকাশ আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে সরকারের প্রতিনিধি হবেন রাজজ্যোতিষী নিমাই ব্যানার্জি। এই জ্যোতিষী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন পরিবর্তন হবেই হবে। জ্যোতিষীর ভবিষ্যদ্বাণী হুবহু মিলে গেছে। ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এর ফলে ওই জ্যোতিষীর পসারও বেড়ে গেছে। পুরস্কার হিসেবে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ পাইয়ে দিতে মরিয়া সরকার।

সরকারপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে জ্যোতিষীর আবির্ভাব হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা অর্জন সম্ভব হবে। কারণ গণনা করে আগেই বলে দেওয়া যাবে কোন মামলায় সরকারপক্ষ হারতে পারে। এর ফলে, যে সব মামলায় সরকারপক্ষের জিত সুনিশ্চিত সেই সব মামলাই বিচারাধীন রাখার বন্দোবস্ত করা যেতে পারে। আইনজীবিদেরও গণনাদ্বারা বোঝাতে সুবিধা হবে কোন মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, কোন মামলা নিয়ে বেশি দূর এগোনো উচিত হবে না। বলা বাহুল্য, বিগত এক বছরে গন্ডা খানেক মামলায় সরকারের হার হয়েছে। বেচারাম নামের এক মন্ত্রী এই বিষয়ে বিচারকদের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে আদালত অবমাননার দায়ে জর্জরিত। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এবং পঞ্চায়েতমন্ত্রীও বিচারকদের প্রতি কটু মন্তব্য করেছেন। বলা হচ্ছে, আইন বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতিষীর আবির্ভাব তাই মানুষকে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থাবান করে তুলতে সাহায্য করবে। 

শ্রীনিমাই রাজজ্যোতিষী পদে অভিষিক্ত হওয়ার পর রাজ্যে অলৌকিক অদ্ভূতুড়ে কান্ডকারখানা চলছে। যেমন মহাকরণে এক বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবিকে কাঁধে ঝোলা নিয়ে সান্তাক্লজ সেজে ঘুরতে দেখা গেছে। বেশ কিছু তৃণমূল নেতাকে রাতারাতি বড়লোক হতে দেখা গেছে। শিল্পপতিদের রাজ্য ছেড়ে পালাতে দেখা গেছে। নতুন শিল্পপতিদের রাজ্যের প্রতি অনাস্থা দেখা গেছে। তোলাবাজি নিয়ে দলের নেতাদের দলেরই অন্য নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে দেখা গেছে। দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাকে অন্য নেতার লোকেদের হাতে মার খেতে দেখা গেছে। দেখা গেছে বিভিন্ন জায়গায় দল বেঁধে ছাত্ররা শিক্ষক পেটাচ্ছেন। দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেও দল থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছেন না। এসব কিছু রাজজ্যোতিষীর পরামর্শেই করা হচ্ছে। প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খন্ড থেকে ভুঁইফোড়ের মতো উদয় হয়ে রাজ্যসভার তৃণমূলী সাংসদ হয়েছেন কে ডি সিং। যদিও প্রায় আড়াই কোটি টাকা গাড়ি সমেত আটক হওয়ার পর থেকেই তাঁর দিকে আঙুল উঠছিল। কেন্দ্র সরকার থেকে তৃণমূলীরা সরে আসার পরেই অলৌকিক ভাবে সেই কান্ড নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতিষীর কাছেই জেনে নিচ্ছেন কোন ঘটনাটা সাজানো হয়েছে। কানে আসছে, পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকান্ডের পর মুখ্যমন্ত্রীর ‘সাজানো ঘটনা’ মন্তব্যের পেছনে এই রাজজ্যোতিষীর ভূমিকা ছিল। রোজ সকালে নাকি মুখ্যমন্ত্রী রাজজ্যোতিষীর কাছে জেনে নিচ্ছেন কবে কোন দিকে আঙুল তুলতে হবে।

অন্যদিকে অনেক মানুষ নিমাই ব্যানার্জির চেম্বারে ধর্ণা দিয়ে পড়ে আছেন। তাঁরা জানতে চাইছেন এই সরকারের বিদায়ের তিথি। জ্যোতিষীও ফাঁপরে পড়েছেন। বিদায়ের তিথি সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইছেন না। এখন অলৌকিকতার অনির্দিষ্ট খামখেয়ালিপনার দিকে তাকিয়ে রাজজ্যোতিষী নিমাইয়ের কাছে হাত জোড় করে বসে থাকা ছাড়া গতি নেই। বিদায় তিথিটি একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন তো।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM