ত্রিফলা একটি ভেষজ মিশ্রণ এবং আয়ুর্বেদশাস্ত্রে ত্রিফলার মিশ্রণকে জোলাপ হিসেবে ব্যবহারের চল আদ্দিকাল থেকেই হয়ে আসছে। রোগ নিরাময়ে ত্রিফলার প্রয়োজন সর্ববিদিত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে ত্রিফলা বিভিন্নরকম রোগ বহন করছে। ত্রিফলা নাকি এক আছোলা বাঁশের মতো। ত্রিফলা নাকি ছুঁচো গেলার মতো। ত্রিফলা নাকি প্রদীপের নিচে অন্ধকারের মতো। বিজ্ঞানিরা বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার দিনেও ত্রিফলার রোগ নিরাময় করার ভূমিকার পুরোপুরি ব্যাখ্যা দিতে অপারগ। ঠিক তেমনি বর্তমান সরকার এবং তার অনুচর পুরসভাগুলি ত্রিফলার ব্যাখ্যা দিতে পারছেনা। ত্রিফলা আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। কিন্তু সরকারের কাছে ত্রিফলাই আবার বিষাক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে সরকারকে দূষিত করছে। শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে ত্রিফলা যেমন শরীরকে পুনর্যৌবন প্রদান করে, তেমনি সরকার বিরোধীদের এই ত্রিফলাই পুনর্জীবিত করে ও নতুন শক্তি সঞ্চারিত করে শক্তিশালী করছে।
শাস্ত্রীদের মতে ত্রিফলা হজম প্রক্রিয়াকে সুস্থ রাখে। কিন্তু ত্রিফলা ভক্ষণ সরকারের কাছে পীড়াদায়ক হয়ে উঠছে। হজম প্রক্রিয়ায় গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। এখন না পারা যাচ্ছে গিলতে। না পারছে ওগলাতে। তাই পুরসভার ত্রিফলা ভক্ষণের প্রচারে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও রাস্তায় নেমেছেন। তিনি বলছেন, ত্রিফলা খেলে যেমন মানুষের সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি হয়, তেমন রাস্তার ধারে ত্রিফলা লাগালে শহরও তিলোত্তমা হয়ে ওঠে। যত তাড়াতাড়ি ত্রিফলাময় করা যাবে তত তাড়াতাড়ি সৌন্দর্য্যবৃদ্ধি হবে। ইত্যাদি এবং ইত্যাদি।
ত্রিফলায় থাকে তিনটি ফল। আমলকী, হরিতকী ও বহেড়া। এই তিনটি ফলের বিভিন্ন গুণাগুণ মিলিয়ে ত্রিফলা তৈরি হয়। রাজ্যের ত্রিফলায় আছে তিনটি ফালা। দুর্নীতি, কুমতি এবং কেরামতি। এই তিনটি ফালা’র অবগুণ মিলিয়ে ত্রিফলা তৈরি হয়েছে। ত্রিফলা এখন বিরোধীপক্ষের কাছে শিবের ত্রিশূল। যখন পারছে ধুনি খোঁচানোর কায়দায় সরকারকে একটু খোঁচা মেরে দিচ্ছে। সরকারও জ্বলছে। ধিকি ধিকি আগুনে বিরোধীরা শীতের দিনে হাত পা সেঁকে নিচ্ছে। বেজায় মজা পেয়ে গেছে বিরোধীরা।
আয়ুর্বেদশাস্ত্রীদের স্থির বিশ্বাস ত্রিফলা যখন সরকার এবং সরকার সমর্থিত পুরসভাগুলি খেয়ে ফেলেছে, তখন ত্রিফলা কোনদিন জোলাপের কাজ নিশ্চয়ই করবে। অনেক সময়ে ভেষজ ওষুধ দেরিতে কাজ করে। এখন দিন গোণা ছাড়া উপায় নেই। ত্রিফলার ত্রিদোষনাশক গুণাবলী দেখে একদিন এই সরকারের সুমতির উদয় হবেই হবে।