কংগ্রেস আর মমতার দলের মধ্যে যে ‘রাগঝাল’ চলছে তাতে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের কিছু নেতা অখুশি থাকলেও দিল্লির আদেশে ‘বাঘে’ আর গোরুকে এক ঘাটে জল খেতে হবে। বলা বাহুল্য, মমতা সেদিন হকারদের কাছে নিজেকে ‘বাঘের বাচ্চা’ বলে জাহির করে এসেছেন। কংগ্রেসের কাছে এখন ঠ্যালার নাম ধনঞ্জয়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম পশ্চিমবঙ্গের জোট সরকারের রাজনৈতিক কলহকে ‘দাম্পত্য কলহ’ কখনো বা ‘ঝগরুটে দম্পতি’ বলে আখ্যা দিয়ে রসিকতা শুরু করে দিয়েছে।
ইন্দিরা ভবনের নাম বদলে দেওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য নজরুলকে সম্মান করা বললে ভুল হবে। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বাংলার না, সারা ভারতের সম্পদ, এমনকি দেশের বাইরে বাংলাদেশেও তিনি সমাদৃত। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান, কীর্তি অসামান্য। বামফ্রন্ট সরকারের সময় কলকাতায় নজরুল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কলকাতায় নজরুল মঞ্চের লাগোয়া অংশেও নির্মাণ করা যেতে পারে, সেখানে জায়গাও আছে। কবির জন্মস্থান চুরুলিয়ায় নজরুল আকাদেমিও আছে। সেখানে তাঁর ব্যবহৃত কিছু সামগ্রীও আছে। চুরুলিয়াতে নজরুল আকাদেমিকে আরো ভালোভাবে করা যেতে পারে। ইন্দিরা ভবনের নাম পরিবর্তন করে নজরুল আকাদেমি করার সিদ্ধান্তের পেছনে কংগ্রেসকে তাচ্ছিল্য করার উদ্দেশ্য কাজ করছে। এই কথাটা কংগ্রেস বুঝেও ‘বাঘের বাচ্চা’র সঙ্গে এক ঘাটে জল খাচ্ছে। তবে কাকে ভয় পেয়ে পশ্চিমবঙ্গে ‘বাঘের বাচ্চা’ গোরুর সঙ্গে মিলেমিশে এক ঘাটে জল খাচ্ছে!
মমতা কিংবা তাঁর দলের যে কেউ কোন কিছু হলেই সিপিএমের নামে দোষ দিতেন। তা সে ভূমিকম্প বা বন্যাই হোক না কেন। ইদানীং মমতা সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসকেও জুড়ে দিতে দ্বিধা করছেন না। সম্প্রতি রায়গঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বেধড়ক মারধোর করে মমতার দলের ছাত্র সংগঠন এবং ঐ দলের কিছু স্থানীয় নেতা। কিন্তু মহাকরণ থেকে মমতা যথারীতি দোষ চাপিয়ে দেন তাঁর চিরশত্রু সিপিএমের দিকে। তার সঙ্গে দাম্পত্য কলহের সূত্র ধরে কংগ্রেসের নামও জুড়তে ভোলেননি। বোঝা যাচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে যতদিন তাঁর গাঁটছড়া বাঁধা থাকবে ততদিন যে কোন অঘটনেই তিনি কংগ্রেসেরও দোষ বা ষড়যন্ত্র খুঁজে নেবেন।
প্রদেশ কংগ্রেসের অনেকে বলছেন, যেভাবে তৃণমূলী মন্ত্রীরা কংগ্রেসকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে ঠিক সেই ভাবেই রাজ্যের কংগ্রেসের মন্ত্রীরাও বলুন। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেসের নেতাদের ‘চেয়ার’এ বসার লালসা থেকেই গেছে। রাজ্যে যেকটি ‘চেয়ার’ তাঁদের জনে বরাদ্দ আছে সেকটিতে জোঁকের মতো এঁটে থাকাই একমাত্র কর্তব্য। তাই যারা মন্ত্রী নন তাঁদের নামে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না।
দিল্লির কংগ্রেস আবার অন্য দিকে তীর ছুঁড়তে শুরু করেছে। মমতা যেমন সবেতেই সিপিএমের দোষ খুঁজে পান ঠিক তেমনি দিল্লির কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ‘দাম্পত্য’ কলহের ‘নারদ মুনি’কে খুঁজে পেয়েছে। কারণে কিংবা অকারণে খামোকা এভাবে কংগ্রেসের ওপর মমতার চটে যাওয়ার পেছনে বি জে পি’র ‘নারদ মুনির’ ভূমিকা কাজ করছে বলে কংগ্রেস মনে করতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু ‘নারদ’কে কংগ্রেস সফল হতে দেবেনা বলেই প্রতিজ্ঞা করে ফেলেছে। ইতিহাস সাক্ষী রেখে বলা যেতে পারে মমতাও ‘চেয়ার’ ছেড়ে ‘ঘর’ পালটে পাল্লা ভারী দেখলে বিজেপির দিকে ঢলে পড়তে পারেন। তাই ‘কলসীর কানা’ কিংবা ইঁট-পাথর তুলে মারলেও কংগ্রেস তাদের ঘরোয়া ঝগড়া নিজেদের মধ্যে বসে মিটমাট করে নিতে সক্ষম বলে মনে করছে।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লির ‘ঘর’ ভেঙে মমতার পালিয়ে যাওয়ার সংকেত কংগ্রেস এখন থেকেই আন্দাজ করতে পারছে। ‘চেয়ার’ ছাড়া যে দলের একদন্ডও চলেনা তাদের রাজনৈতিক নৈতিকতা নিয়ে কোন আলোচনা করার প্রসঙ্গই ওঠেনা। মনমোহন সিংহ বলেছেন, “সমস্যা ছাড়া জীবন হয় না। আমাদের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের ইচ্ছা ও দৃঢ়তা থাকলে এই সাময়িক সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠবই।” কংগ্রেসের ‘ইচ্ছা’ বলতে আগামী লোকসভার আগে যেন ‘চেয়ার’ ছাড়তে না হয়। আর ‘দৃঢ়তা’ মানে চেয়ার না ছাড়ার জন্যে যা করতে হয় তাই করা হোক। আর সাময়িক সমস্যা এখন ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’. রাজ্যের কংগ্রেসের যারা মন্ত্রী তাঁরা চাচা। কেন্দ্রে এখন কংগ্রেসই চাচা। তাই সব ‘চাচা’রা মিলে আপন আপন প্রাণ বাঁচাতে এক ঘাটে জল খাবে এ আর নতুন কি! তাই দিল্লিতে কংগ্রেসকে বিব্রত করতে মমতা যদি বামপন্থীদের মতো আন্দোলন করেন, কংগ্রেসকে সহ্য করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা যদি কংগ্রেসের নামে সিপিএমের সঙ্গে ‘ষড়যন্ত্রে’ শামিল হওয়ার দুর্নাম রটায় তাও সহ্য করতে হবে। ‘বাঘের বাচ্চা’কে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলেমিশে এক ঘাটে জল খেতেই হবে। সুবিধেবাদী রাজনীতির এটি একনম্বর সূত্র।
ইন্দিরা ভবনের নাম বদলে দেওয়ার মুখ্য উদ্দেশ্য নজরুলকে সম্মান করা বললে ভুল হবে। কাজী নজরুল ইসলাম শুধু বাংলার না, সারা ভারতের সম্পদ, এমনকি দেশের বাইরে বাংলাদেশেও তিনি সমাদৃত। বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান, কীর্তি অসামান্য। বামফ্রন্ট সরকারের সময় কলকাতায় নজরুল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কলকাতায় নজরুল মঞ্চের লাগোয়া অংশেও নির্মাণ করা যেতে পারে, সেখানে জায়গাও আছে। কবির জন্মস্থান চুরুলিয়ায় নজরুল আকাদেমিও আছে। সেখানে তাঁর ব্যবহৃত কিছু সামগ্রীও আছে। চুরুলিয়াতে নজরুল আকাদেমিকে আরো ভালোভাবে করা যেতে পারে। ইন্দিরা ভবনের নাম পরিবর্তন করে নজরুল আকাদেমি করার সিদ্ধান্তের পেছনে কংগ্রেসকে তাচ্ছিল্য করার উদ্দেশ্য কাজ করছে। এই কথাটা কংগ্রেস বুঝেও ‘বাঘের বাচ্চা’র সঙ্গে এক ঘাটে জল খাচ্ছে। তবে কাকে ভয় পেয়ে পশ্চিমবঙ্গে ‘বাঘের বাচ্চা’ গোরুর সঙ্গে মিলেমিশে এক ঘাটে জল খাচ্ছে!
মমতা কিংবা তাঁর দলের যে কেউ কোন কিছু হলেই সিপিএমের নামে দোষ দিতেন। তা সে ভূমিকম্প বা বন্যাই হোক না কেন। ইদানীং মমতা সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসকেও জুড়ে দিতে দ্বিধা করছেন না। সম্প্রতি রায়গঞ্জ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বেধড়ক মারধোর করে মমতার দলের ছাত্র সংগঠন এবং ঐ দলের কিছু স্থানীয় নেতা। কিন্তু মহাকরণ থেকে মমতা যথারীতি দোষ চাপিয়ে দেন তাঁর চিরশত্রু সিপিএমের দিকে। তার সঙ্গে দাম্পত্য কলহের সূত্র ধরে কংগ্রেসের নামও জুড়তে ভোলেননি। বোঝা যাচ্ছে কংগ্রেসের সঙ্গে যতদিন তাঁর গাঁটছড়া বাঁধা থাকবে ততদিন যে কোন অঘটনেই তিনি কংগ্রেসেরও দোষ বা ষড়যন্ত্র খুঁজে নেবেন।
প্রদেশ কংগ্রেসের অনেকে বলছেন, যেভাবে তৃণমূলী মন্ত্রীরা কংগ্রেসকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করছে ঠিক সেই ভাবেই রাজ্যের কংগ্রেসের মন্ত্রীরাও বলুন। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকে কংগ্রেসের নেতাদের ‘চেয়ার’এ বসার লালসা থেকেই গেছে। রাজ্যে যেকটি ‘চেয়ার’ তাঁদের জনে বরাদ্দ আছে সেকটিতে জোঁকের মতো এঁটে থাকাই একমাত্র কর্তব্য। তাই যারা মন্ত্রী নন তাঁদের নামে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না।
দিল্লির কংগ্রেস আবার অন্য দিকে তীর ছুঁড়তে শুরু করেছে। মমতা যেমন সবেতেই সিপিএমের দোষ খুঁজে পান ঠিক তেমনি দিল্লির কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের ‘দাম্পত্য’ কলহের ‘নারদ মুনি’কে খুঁজে পেয়েছে। কারণে কিংবা অকারণে খামোকা এভাবে কংগ্রেসের ওপর মমতার চটে যাওয়ার পেছনে বি জে পি’র ‘নারদ মুনির’ ভূমিকা কাজ করছে বলে কংগ্রেস মনে করতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু ‘নারদ’কে কংগ্রেস সফল হতে দেবেনা বলেই প্রতিজ্ঞা করে ফেলেছে। ইতিহাস সাক্ষী রেখে বলা যেতে পারে মমতাও ‘চেয়ার’ ছেড়ে ‘ঘর’ পালটে পাল্লা ভারী দেখলে বিজেপির দিকে ঢলে পড়তে পারেন। তাই ‘কলসীর কানা’ কিংবা ইঁট-পাথর তুলে মারলেও কংগ্রেস তাদের ঘরোয়া ঝগড়া নিজেদের মধ্যে বসে মিটমাট করে নিতে সক্ষম বলে মনে করছে।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লির ‘ঘর’ ভেঙে মমতার পালিয়ে যাওয়ার সংকেত কংগ্রেস এখন থেকেই আন্দাজ করতে পারছে। ‘চেয়ার’ ছাড়া যে দলের একদন্ডও চলেনা তাদের রাজনৈতিক নৈতিকতা নিয়ে কোন আলোচনা করার প্রসঙ্গই ওঠেনা। মনমোহন সিংহ বলেছেন, “সমস্যা ছাড়া জীবন হয় না। আমাদের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের ইচ্ছা ও দৃঢ়তা থাকলে এই সাময়িক সমস্যা আমরা কাটিয়ে উঠবই।” কংগ্রেসের ‘ইচ্ছা’ বলতে আগামী লোকসভার আগে যেন ‘চেয়ার’ ছাড়তে না হয়। আর ‘দৃঢ়তা’ মানে চেয়ার না ছাড়ার জন্যে যা করতে হয় তাই করা হোক। আর সাময়িক সমস্যা এখন ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’. রাজ্যের কংগ্রেসের যারা মন্ত্রী তাঁরা চাচা। কেন্দ্রে এখন কংগ্রেসই চাচা। তাই সব ‘চাচা’রা মিলে আপন আপন প্রাণ বাঁচাতে এক ঘাটে জল খাবে এ আর নতুন কি! তাই দিল্লিতে কংগ্রেসকে বিব্রত করতে মমতা যদি বামপন্থীদের মতো আন্দোলন করেন, কংগ্রেসকে সহ্য করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা যদি কংগ্রেসের নামে সিপিএমের সঙ্গে ‘ষড়যন্ত্রে’ শামিল হওয়ার দুর্নাম রটায় তাও সহ্য করতে হবে। ‘বাঘের বাচ্চা’কে কংগ্রেসের সঙ্গে মিলেমিশে এক ঘাটে জল খেতেই হবে। সুবিধেবাদী রাজনীতির এটি একনম্বর সূত্র।