পুরাকালে বঙ্গবর্ষে এক অস্থিরমতি ও মিথ্যাচারী রাণী মমতার রাজত্ব ছিল। সেই সময়ে প্রজাগণের সমীপ তিনি কৌতুকোপাদান রূপে স্থাপিত হইয়াছিলেন। কথিত আছে যে তিনি সরিষাদানার ভিতর ভুত দেখিবার বদলে সিপিএম দেখিতে পাইতেন।
“হে হুতোম পন্ডিত, আপনি সর্বজ্ঞানী ও সর্বলোকগামী। আমরা শ্রুত হইতে চাই সিপিএম কি ছিল ও কেনই বা তিনি সরিষার মধ্যে ভূতের বদলে সিপিএম দেখিতে পাইতেন।” এই বলিয়া রাজা জনার্দন হুটাহুট শব্দবাণ নিক্ষেপ করিলে তৎক্ষণাৎ হুতোম পন্ডিতের আবির্ভাব হইল।
“হে রাজা, বহুবৎসর পূর্বে বঙ্গবর্ষে একদা সিপিএম নামক একটি প্রজাগোষ্ঠীর হস্তে রাজ্যভার সমর্পিত হইয়াছিল। সেই সময়ে প্রজাগণ পরমসুখে দিনযাপন করিতেন। ধনী ও দরিদ্রের ভেদাভেদ নির্মূল করিবার লক্ষ্যে ওই প্রজাগোষ্ঠীটি সর্বদা তৎপর ছিল। কিন্তু বিশ্বের ধনী রাজাসমূহ এবং ওই রাজাদের চাটুকার প্রজাসমূহ সিপিএমকে বঙ্গবর্ষ হইতে উৎপাটিত করিতে সর্বদা প্রচেষ্টারত ছিলেন। বর্ণিত আছে যে ক্রমাগত সপ্তনির্বাচনযুদ্ধ বিজয়ী সিপিএমপ্রজাগোষ্ঠী অষ্টম নির্বাচনযুদ্ধে বিশ্বের সমগ্র রাজা তথা ধনী সওদাগরবর্গ যথাশক্তি প্রয়োগ করিলে সিপিএম বঙ্গবর্ষে পরাস্ত হইয়াছিল। ইহার ফলস্বরূপ ধনী প্রজাসমূহের ভূয়সী লাভসাধন হইলেও সাধারণ প্রজাবর্গের ক্ষতি অবলোকিত হইত।”
“কথিত আছে যে ওই সময়ে পার্বত্যদেবী পার্বতীর ভজনানিমিত্ত প্রজাগণ দূর্গাপূজা করিত এবং পূজাকালে পরমসুখ উপলব্ধ হইত। পূজার প্রাক্কালে বিভিন্ন সংস্থানের কার্মিক প্রজাগণ উপহারস্বরূপ রাজাকর্ত্তৃক যৎসামান্য অর্থপ্রাপ্ত হইতেন। তাহাকে বোনাস বলা হইত। ওই অর্থদ্বারা প্রজাগণ খাদ্য ও বস্ত্র ক্রয় করিয়া পরমসুখে পূজা উপভোগ করিতেন। ওই অস্থিরমতি রমণী মমতার রাজত্বের প্রথমবর্ষে পূজাকাল আগত হইলে উচিত সময়োপরান্ত প্রজাগণ বোনাসপ্রাপ্ত না হইলে রাণী প্রজাকর্ত্তৃক কুপিত হইয়াছিলেন। স্বীয় দোষ লুক্কায়িত করিবার নিমিত্ত এবং সিপিএম নামক প্রজাগোষ্ঠীকে প্রজাগণের সমীপ অপমান করিবার ইচ্ছার প্রাবল্যের ফলস্বরূপ বোনাস অপ্রাপ্তির কারণ বিষয়ে তিনি সিপিএমকেই দোষারোপ করিয়াছিলেন। তিনি ভাবিতেন এইরূপ দোষারোপণ করিলে সাধারণ প্রজাগণ সিপিএম বিমুখ হইবেন এবং মিথ্যাচারী রাণী মমতা পরমসুখে রাজসুখভোগ করিবেন। হে রাজা জনার্দন, রাণী হিংসার বশীভূত ছিলেন এবং মিথ্যাচারী ছিলেন বলিয়া সিপিএমকে সর্বদাই অপমান করিবার সুযোগসন্ধান করিতেন। প্রজাগণের নিকট স্বীয় দুষ্কর্ম গোপন করিবার নিমিত্ত তিনি এইরূপ যথেচ্ছাচার করিতেন। মিথ্যারটনাদ্বারা গরীব প্রজাগণকে সিপিএমবিমুখ করিতে পারিলে তাঁহার রাজত্ব চিরস্থায়ী হইবে, এইরূপ ভাবনাদ্বারা চালিত হইয়া তিনি স্বীয়দোষ সিপিএম-এর স্কন্ধারোপণ করিতেন।” এই বলিয়া হুতোম পন্ডিত ফরফর করিয়া ডানাবিস্তারপূর্বক মহাকাশে বিলীন হইলেন।