এবার আবির্ভাব ‘মুশকিল আসান’ পিসির। যে কোন সমস্যার চট জলদি সমাধান। মনে করুন আপনার হার্টে ফুটো হয়েছে। সমাধান আপনার হাতের মুঠোয়। গায়ে মাখার সাবান একটু গলিয়ে নিয়ে চিপকে দিন হার্টের ফুটোয়। ব্যাস। ডেঙ্গু হলে খুব করে জল খেয়ে নিন। ব্যাস। যদি রোগ না সারে তবে বুঝে রাখুন এর পেছনে গভীর চক্রান্ত চলছে। মানুষকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মেরে ফেলার চক্রান্ত। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। আর পটাপট ভোট দিন। মুশকিল আসান। চৌত্রিশ বছরের জগদ্দল পাথর ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলে মামদো ভূতের ডিগবাজি গুনতে গুনতে দুবছর দিব্যি কাটিয়ে এবার মনে হচ্ছে মুশকিল আসান পিসি বড়ই নিষ্ঠুর। সমস্যা দেখলেই স্যাটাস্যাট ওভার বাউন্ডারি মেরে দিচ্ছেন। সমস্যা গিয়ে পড়ছে গ্যালারির দর্শকের ঘাড়ে। দর্শকদের সে কি আনন্দ! হাততালি। আরেকটা হয়ে যাক। আরেকটা সমস্যাকে ওভার বাউন্ডারিতে পাঠান পিসি। কি ক্যালি মাইরি!
ইলিশ মাছের বীজ গিয়ে ফাঁকা মাঠে চাষ করুন। জলের অভাব হবে না। বালতি ধরো আর জল ভরো। এই ফন্দি পিসি চালু করে দিয়েছেন। বালতি বালতি জল ভরে বাড়ির পাশে ডোবাখানা বানিয়ে ফেলুন দাদা। রইলে ডোবাখানা খাইবে চারাপোনা। তার মধ্যে ইলিশের বীজ। মচ্ছবে মাছ খাওয়াতে পারবেন এবার। এইটাও একটা শিল্প। মৎস্য শিল্প। এছাড়া পেঁয়াজ চাষ করুন। পেঁয়াজ কলি খাবেন না। বড় বড় পেঁয়াজ হতে দিন। পেঁয়াজ বেচুন। নো পেঁয়াজি। পরিশ্রম করুন। এর ফলে পেঁয়াজ রফতানি হবে। টাকা রোজগার হয়ে গেল। তাই দিয়ে টিভি কিনুন। আর চ্যানেল দেখুন। পেঁয়াজ শিল্পে আমরা প্রথম হয়ে যাব। আদাতেও তাই। তাই পটাপট ভোট দিন।
পিসি এবার মুরগি শিল্পেও উন্নতি করেছেন। এবার হবে মুরগি উৎসব। এবার থেকে রোজ মুরগি কিনুন। মুরগির দাম পিসি স্যাট করে কমিয়ে ফেলেছেন। দেড়শো টাকায় মুরগি কিনে ১৪০ টাকায় বেচতে হবে। ভোটারদের এই সুবিধাটুকু না দিতে পারলে মুরগি বেচতে বসেছেন কোন মুখে! দোকান ছাড়ুন। অনেক দোকানদার আছেন। সরকারি দোকান থেকে মুরগি বেচা চালু হবে। মানুষ মাংস কিনবেন আর কপাকপ খাবেন। আদ্ধেক মানুষ গত দু’বছরে মুরগি হয়েছেন। বাকি আদ্ধেক মানুষ আগামী দু’বছরে মুরগি হয়ে যান। মুরগি হয়ে বেঁচে থাকার বিড়ম্বনা আর সইতে হবেনা। মুরগির দাম কমতেই থাকবে। স্যাটাস্যাট মানুষের পেটে চলে যাবেন। ব্যাস। মানুষ তবে মুরগি হলেই মুশকিল আসান।
মুশকিল আসান পিসির কাছে শিল্প মানে জলভাত। শিল্প! পিসি অল্প জানলেও ওসব শিল্প নিয়ে গল্প দেবেন না। শিল্প মানে শুধু গাড়ি তৈরি নয়। রন্ধন শিল্প, ক্রন্দন শিল্প, কাঁথা শিল্প এসব শিল্পের চাহিদা বাড়ছে। শিল্প মানেই প্রযুক্তি। আর যুক্তি না থাকলে প্রযুক্তি আসবেনা। তাহলে কাজের সুযোগও বাড়ল না। তাই যুক্তি থাকতে হবে। দু’কোটি তিন লক্ষ টাকার দেনায় ডুবে গরমেন্টের হিমশিম অবস্থা। কোন যুক্তি আছে! এর মধ্যে যেখানে যেখানে সুযোগ আছে সেখানে সেখানেই শিল্প নিয়ে আসতে হবে। মনে করুন পাহাড় হাসছে। তাহলে ওখানে পর্যটকদের একটা করে গোপাল ভাঁড়ের বই দেওয়া যেতে পারে। বই পড়লেই হাসি পাবে। এর ফলে হাসি শিল্প বাড়ল। সঙ্গে সঙ্গে বই শিল্পও বাড়ল। কি বাড়ল তো! অ্যাই ডিএম, তুমি গুনে বলো তো কতগুলো গোপাল ভাঁড় পাঠাতে হবে।