পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সুশাসক নাকি কুশাসক এই কথা বলাটা আমার ধৃষ্টতা। কারণ আমি শাসনের কচু জানি। তবে তিনি যে ভাষায় কথা বলেন সেটা তাঁর অসভ্যতা। কারণ আমি ভাষা সম্বন্ধে কিছুটা জানি। বাংলা ভাষাকে অনেকে বলেন মিষ্টি ভাষা। বাঙালিদের অনেকেই বলেন সংস্কৃতিমনস্ক। রকবাজদের ভাষা আর মুখ্যমন্ত্রীর ভাষা যদি এক হয়ে যায় তবে হয়তো একদিন শুনতে হবে বাঙালি একটি চূড়ান্ত অসভ্য জাতি। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী আক্ষরিক অর্থে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করলেও সামগ্রিক অথবা ভাবার্থে তিনি বাঙালি জাতিরও প্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনিই যদি বলেন ‘আমাকে ধমকে-চমকে কেউ কিছু করতে পারবেনা’ তবে তো বলতে হয় তিনি রকবাজ কিছু দুষ্কৃতী বাঙালির প্রতিনিধিত্ব করছেন।
হাতি চলে বাজার, তো কুত্তা ভুকে হাজার। এটি একটি বহু প্রচলিত হিন্দি প্রবাদ। বহু প্রচলিত বলেই বাংলা ভাষায়ও স্থান করে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে হাতি বলতে পারেন না। ব্যাপারটা হাস্যকর হয়ে যাবে। তাই তিনি কয়েকমাস আগে তাঁর সমালোচক কিছু সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, বাবু চলে বাজার, তো কুত্তা ভুকে হাজার। যদিও কুকুর একটি বিশ্বস্ত গৃহপালিত জন্তু। গৃহস্থের ঘর পাহারা দিতে কুকুরের জুড়ি মেলা ভার। রাতবিরেতে চোর এলে ঘেউ ঘেউ করে। হাঁস-মুরগি চুরি করতে শেয়াল এলে ঘেউ ঘেউ করে। রাস্তায় রাস্তায় ছেঁড়া কাপড়চোপড় পরা পাগল দেখলেও ঘেউ ঘেউ করে। কাগজকুড়ুনিদের বস্তা দেখলেও ঘেউ ঘেউ করে। কুকুরের স্বভাবটাই এমন। ওদের তাই পাহারাদার বলা হয়।
মাত্র কিছুদিন আগে মার্কন্ডেয় কাটজু’র উদ্দেশ্যে তিনি বললেন, রাজা চলে বাজার, তো কুত্তা ভুকে হাজার। কাটজু’র দোষ, তিনি বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে ‘খামখেয়ালি ও অসহিষ্ণু’ বলেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী ‘কুত্তা’ শব্দটি বারবার ব্যবহার করে এমনই বিখ্যাত হয়েছেন যে এইবার তিনি যদি একটা কুকুরের মতো দেখতে কোন কিছুর ছবি এঁকে ফেলেন তবে তাঁর ‘গুণগ্রাহী’রা সেই ছবি কিনতে কমপক্ষে দশ কোটি টাকা খরচ করবেই।
‘কুত্তা’র ঘেউ ঘেউ দিনের পর দিন বেড়ে যাচ্ছে। চোর দেখতে পেলে কুকুর ঘেউ ঘেউ তো করবেই। আটকানো যাবে কি? পাগল দেখলে কুকুর ঘেউ ঘেউ করবেই। সাহস থাকলে আটকান। শেয়াল দেখলে কুকুর ডাকবেই। যদিও ‘রাজা’, ‘বাবু’ বা রাণীকে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যেতে দেখলে কোন কুকুর হাঁক পাড়েনা। আমি তো এমনটি কোন দিন দেখিনি। আপনারা দেখেছেন কি? যদি দেখেন কোন রাজামশাইকে হাঁটতে দেখে পাড়ার কুকুরগুলো ডাকতে শুরু করেছে, তবে জেনে রাখুন ওই রাজার গায়ে নিশ্চয়ই চোর চোর গন্ধ বেরোচ্ছে।