Flickr Gallery

Wednesday, April 18, 2012

ক্ষমতাপন্থী বুদ্ধিজীবিদের মমতার মানুষ জবাব দেবেন


বাংলার শুদ্ধিকরণ করতে গিয়ে বেজায় জব্দ হয়েছেন কিছু না পাওয়া বুদ্ধিজীবির দল। এখন বাজারে মমতাপন্থী বুদ্ধিজীবিদের দুটি দল। একটি দল অনেক কিছু পেয়ে গেছে। আরেকদল কিছুদিন কিছু পাওয়ার আশায় বসেছিল। কিন্তু ভাঁড়ে মা ভবানী। শোনা যাচ্ছে এতেই বেজায় ক্ষেপেছেন বঞ্চিত বুদ্ধিজীবির দল। অনেকে বলাবলি করছেন নৈরাজ্য নাকি এসে গেছে। গুটিকয়েক ‘জনগণ’ সম্বল করে তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন। এমনিতে তাঁদের রাস্তা ঘাটে কম দেখা যায়। নন্দীগ্রামের ফন্দি করতে অনেকে মাওদের সঙ্গে গলা জড়িয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। তারপর কেটে গেছে বেশ কয়েক বছর। বুদ্ধিজীবিরা চাতক পাখির মতো চেয়ে বসেছিলেন। ক্ষমতাময়ী মমতার কাছ থেকে কিছু না পাওয়ার বঞ্চনা তাঁদের হৃদয় বিদীর্ণ করেছে। আবার তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।

বুদ্ধিজীবিরা কিন্তু মোটেই সুবিধার বস্তু নয়। এরা আগেও অসুস্থ ছিলেন। এখনও এরা অসুস্থ। এঁদের এখন মনোভাব একটুও বদলায়নি। এখন তাঁরা যে কথাগুলি বলছেন সেগুলি বামপন্থীরা বিশেষ করে সিপিআইএম অনেকদিন আগে থেকেই বলে আসছে। মমতাপন্থীদের অনেকে এখন বলাবলি করছেন স্বৈরাচারী শাসন চলছে। একথা তো বামপন্থীরা অনেকদিন আগেই আন্দাজ করে নিয়েছিলেন। তবে বুদ্ধিজীবিদের সে কথা স্বীকার করতে দোষ কোথায়! মহাশ্বেতা দেবীও দশ মাসের শাসনকালে বারদুয়েক স্বৈরাচারের পদধ্বনি শুনতে পেয়েছেন। তবে তাঁর কলমের কালি ফুরিয়ে গেছে। বামবিদ্বেষ করতে পারছেন না বলে লেখার উদ্দীপনা পাচ্ছেন না। মমতার বিরুদ্ধে লেখার সাহস তাঁর নেই।

মমতাও তাঁর চলনে বলনে অসুস্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। অধ্যাপকের হাজতবাস তাঁর অসুস্থ মানসিকতার প্রতিফলন। তারপরও তিনি ক্ষান্ত হননি। ফেসবুকের কাছে রাজ্য পুলিশের চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে উদ্দেশ্য করে সকল কার্টুন সরিয়ে দেওয়া হোক। যারা ফেসবুকে কার্টুন পাঠাচ্ছেন, তাঁদের ঠিকানা রাজ্য পুলিশের কাছে দেওয়ার জন্যেও আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। সিপিআইএম-এর লোকেদের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার ফতোয়া জারি করা হয়েছে। কয়েকজন অসুস্থ মন্ত্রী তো প্রতিশোধস্পৃহায় উজ্জীবিত করছেন তাঁর দলের কর্মীদের। সিপিআইএম-এর লোকেদের পাশেও বসা যাবেনা। তাতে নাকি মানসিক দুর্বলতা সৃষ্টি হবে। প্রতিশোধ নিতে গেলে কর্মীরা দুর্বল হয়ে যেতে পারে! মন্ত্রীদেরও চিকিৎসা প্রয়োজন। তিনি রাজ্যের মন্ত্রীরা। তাঁর পক্ষে এই ধরণের শত্রুতা শেখানো থেকে বিরত থাকা উচিত। রাজধর্ম পালন করতে গেলে এই ধরণের উক্তি বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্ত মানসিক অসুস্থ লোকেরা এসব বোঝেননা। এইসব দেখে মমতাপন্থী বুদ্ধিজীবিরা বেজায় ফাঁপরে পড়েছেন। নিজেরাই নিজেদের কানমলা দিচ্ছেন। এরকম হবে তাঁরা ভাবেননি। তরুণ সান্যাল নামের এক বুদ্ধিজীবি তো তাই বললেন আজ। সুনন্দ সান্যাল টিভির অনুষ্ঠানে বসে বেশ কয়েকদিন ধরে ‘ফ্যাসিজম’ শব্দটির ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছেন।

বাংলার শুদ্ধিকরণ করার যে সঙ্কল্প তাঁরা নিয়েছিলেন, তালেগোলে তা তাঁরা করে দেখিয়েছেন। কিন্তু পারিশ্রমিক না পেয়ে অনেকের অভিমান হয়েছে। নইলে মাত্র দশ মাস হতে না হতেই কেন তাঁরা আবার তেড়েফুঁড়ে উঠবেন! এরকম হবে তো জানাই ছিল। সিপিআইএম তো এরকম দিনের হুঁশিয়ারি বারবার দিচ্ছিল তখন। তাঁরা বোঝেননি নাকি? যদি না বুঝে থাকেন তবে তাঁদের রাজনীতি না বুঝেই রাজ্যের রাজনীতিতে হনুমানের মতো লাফালাফি করা উচিত হয়নি। তাঁরা যে বোঝেননি একথা অকাট মূর্খও বিশ্বাস করবেনা। তাঁরা আগে থেকেই বুঝেছিলেন এরকম হতে পারে। তবে তাঁদের ভাঁড়ে শুধুই ভবানী জুটবে তা তাঁরা বুঝতে পারেননি। তাই তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আবার লাফালাফি শুরু করলেন। যারা কিছু কিছু পেয়ে গেছেন তাঁরা নিশ্চিন্তে বসে আছেন। তাঁদের এখন দিনকাল ভালই কাটছে।

তাই মমতাপন্থী লোভী বুদ্ধিজীবিদের রাজনীতিতে লাফালাফি না করাই উচিত। এরা দু’কান কাটার দল। এরাও পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। এরা পায়নি বলে ‘আঙুর ফল টক’ বলে আবার চেঁচামিচি শুরু করেছেন। মানুষের কাছে এঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা শূন্যে ঠেকেছে। কোন রাজনৈতিক দায়বদ্ধতাও এঁদের নেই। তাই দশ মাস যেতে না যেতেই অনেকে এখন পুরোন পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে রাস্তায় নামছেন। রাজ্য যাক রসাতলে। যখন তখন খোলা রাস্তায় লাফালাফি করে সংবাদমাধ্যমের পাতায় পাতায় ঘুরে বেড়ানো এঁদের শখ। তাই এরা রাস্তায় নামছেন। রাস্তা এখন কন্টকময়। একটু সাবধানে রাস্তায় নামলেই মঙ্গল। দিনকাল পালটে গেছে। মমতার ‘মানুষ’ জবাব দেওয়ার জন্যে তৈরি আছে। শুধু একটু ইঙ্গিত পেলেই কেল্লা ফতে। নোনাডাঙায় মমতার ‘মানুষ’ জবাব দিয়েছে। মমতাপন্থী বুদ্ধিজীবিদেরও মমতার ‘মানুষ’ জবাব দিয়ে দিতে পারে যখন তখন। তাই এই পরিবর্তনের দিনকালে মমতাপন্থী বুদ্ধিজীবিদের অন্তত দশ বছর চুপ থাকলেই মঙ্গল। ততদিন তাঁরা রাজনীতিশাস্ত্র অধ্যয়ন করুন।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM