Flickr Gallery

Saturday, February 16, 2019

আসল দেশদ্রোহীদের চিনতে শিখুন

১৩০ জন উচ্চবিত্ত যাত্রীর পরিবারের চাপে সেদিন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এক কুখ্যাত জঙ্গি মাসুদ আজহারকে হাত ধরে নিয়ে গিয়ে কান্দাহারে তালিবান জঙ্গিদের হাতে তুলে দিয়ে ওই ১৩০ জন ছাড়া বাকি সব ভারতবাসীর ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে দিয়েছে। সেই মাসুদ আজহার তারপরে ভারতের ওপর কৃতজ্ঞতা দেখায়নি। পাকিস্তানে পৌঁছে সব ধরণের জঙ্গিদের নাটের গুরু হয়ে বসেছে। আর তখন থেকেই লোকটা ভারতের নাশকতামূলক কাজকর্মের মূল পান্ডা। তখন থেকেই লোকটা পাকিস্তানে ভারতবিরোধী শক্তিগুলোর চোখে মহানায়ক।

বিজেপির সঙ্গে উগ্রপন্থীদের আঁতাত নতুন কিছু নয়। মাসুদ মুক্তির মাশুল ভারত গুণছে। দেশের মধ্যেও বিভিন্ন রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সঙ্গে আঁতাত করে এরা মানুষের ভোটের অবমাননা করতে ছাড়েনা।

বছর দুয়েক আগে বিজেপির আইটি সেলের প্রধানকে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার হয়ে চরবৃত্তি করার দায়ে গ্রেফতার হতে হয়েছে। এরা দেশের সর্বনাশ করতে শাসনে এসেছে। এরা দেশকে টুকরো টুকরো করতে আসামে, মণিপুরে নতুন ধরণের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে পরোক্ষভাবে উস্কানি দিয়ে চলেছে। এরা কাশ্মীরের সমস্যা কাশ্মীরিদের মুখে না শুনে যারা কাশ্মীরে থাকেনা বা যাদের সঙ্গে কাশ্মীরের দূর দূরান্ত পর্যন্ত কোন সম্পর্ক নেই তাদের ভাবনাকে প্রাধান্য দেয়। এরা দেশের শত্রু। এরা কাশ্মীরের শত্রু। এরা শাসনে আসার পরে কাশ্মীর আরও বেশি অশান্ত হয়ে পড়েছে। এরা হিন্দু মুসলমানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেশে বিভিন্ন রকম ঘৃণিত কাজকর্মে লিপ্ত। তাই আমি বিজেপিকে দেশদ্রোহী বলি।

কাশ্মীরের পুলওয়ামাতে উগ্রপন্থী হামলার ছক অনেকদিন আগে থেকেই হচ্ছিল। পাকিস্তানে পালিত জৈশ-এ-মহম্মদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের খবর আগে থেকেই ছিল। এমনকি কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা হামলার আশঙ্কার খবর আগাম জানিয়ে রেখেছিল। তা সত্ত্বেও কেন ২৫০০ জওয়ান নিয়ে অতবড় কনভয় ওই ভয়াবহ রাস্তা দিয়ে কি করে চোখ বুঁজে যাচ্ছিল? এই নাশকতার ষড়যন্ত্রের পেছনে কোন কোন ভারতীয় যুক্ত ছিল? এগুলো চর্চার মধ্যে আসছেনা কেন।

মিডিয়াতে বলা হচ্ছে একটা মাথার বদলে দশটা মাথা আনতে হবে। কেউ কেউ বলছে লাহোরে সেনা ঢুকিয়ে দিতে হবে। কেউ কেউ বলছে পাকিস্তানের দখলে যে কাশ্মীরি ভূভাগ আছে তাকে ভারতের মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে হবে। কেউ কেউ বলছে পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো করে ফেলতে হবে। এইটাই নাকি সুযোগ। কিন্তু কেউ কেন বলছেনা এর পেছনে ভারত সরকারে পদাসীন যে সমস্ত ষড়যন্ত্রকারীরা আছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে! কেউ কেন বলছেনা কেন সেদিন বন্দী মাসুদকে জামাই আদর করে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল!

এদের দেশপ্রেমে মানুষ অন্ধত্বপ্রাপ্ত হয়েছে। বিবেকবান, রুচিশীল মানুষ বাকরুদ্ধ। এইরকম আগমার্কা  দেশপ্রেমিক হতে গেলে কাঁচা খিস্তি দিতে জানতে হয়। কোন অঘটনে সৈন্য মারা গেলে দেশপ্রেমিকদের মোমবাতি জ্বালিয়ে ভারতের পতাকা উঁচিয়ে কাঁচা খিস্তি দিতে দিতে দাঁত কেলিয়ে মিছিল করতে হয়। দেশপ্রেমিকদের পতাকা আর মোমবাতি হাতে নিয়ে সেলফি তুলতে হয়। এরা চোর, জোচ্চোর আর খচ্চরের সংমিশ্রণের তৈরি একটা হাইব্রিড। ভারতের মাটিতে এদের এখন বাড় বাড়ন্ত। সারের অভাব নেই। গোবর প্রধান উপাদান। তার সঙ্গে অযোধ্যা, কাশ্মীর, এনআরসি, রামমন্দির, গোমাংস এইরকম ৩৫৬টি এলিমেন্ট মিশিয়ে কীটনাশক তৈরি হয়েছে। এসবের সাহায্যে ফলন ভালই বলা চলে।
অনেকেই বলতে পারেন যে শোকসন্তপ্ত ভারতে আমি নাকি সস্তার রাজনীতি করছি। যখন সবকটা রাজনৈতিক দল এক সুরে প্রধানমন্ত্রীর তালে তাল মেলাচ্ছে তখন এইসব কথা বলা মানে অসভ্যতা। তা বলুক। দেশদ্রোহী দলটাকে চোখে আঙুল দিয়ে চেনানোর নাম যদি সস্তার রাজনীতি হয় তবে তা মন্দ কি!!

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM