Flickr Gallery

Tuesday, October 4, 2011

সারমেয়বর্গীয় মাধ্যম "সংবাদ নিত্যদিন"এর কুরটনা


একদা বঙ্গবর্ষে স্বৈরাচারী ও মিথ্যাচারী রাণী মমতা রাজকার্য পরিচালনা করিতেন। সেই সময়ে বঙ্গবর্ষে তাঁহার ভজনা নিমিত্ত কতকগুলি সংবাদ মাধ্যম সর্বদা তৎপর ছিল। স্বৈরাচারী রাণীর স্তুতিগান করিলে উপঢৌকন ও অর্থ ইত্যাদি পাইবার লালসা হইতে সারমেয়স্বভাব সংবাদপত্রগুলি বিমুখ ছিলনা।

সেই সময়ে জ্ঞানার্জনের নিমিত্ত প্রজাগণ প্রত্যহ সংবাদপত্র পাঠরত থাকিত এবং সংবাদপত্রের লিখিত বর্ণনা আত্মসাৎ করিয়া চৈতন্যলাভ করিত। সংবাদমাধ্যমগুলি স্বাধীনচরিত্রবিশিষ্ট ছিল এবং তাহা্রা যথেচ্ছ বর্ণনা করিবার অধিকারপ্রাপ্ত ছিল। সামাজিক উন্নতিসাধনের নিমিত্ত তাহাদের স্বাধীন করা হইলেও সুযোগের অপব্যবহার করিবার জন্যে সদৈব তৎপর থাকিত। ওই সময়ে বিভিন্ন সওদাগরি সংস্থা অর্থ ও মুদ্রার বাণিজ্যিক আদানপ্রদান করিত। তাহাদিগকে ব্যাংক বলা হইত। অধিকাংশ প্রজাগণ তাহাদের মাসিক বেতন ও পারিশ্রমিক অর্জনের উদ্দ্যেশে ব্যাংকের দ্বারগ্রস্ত হইত। রাজকোষাগার হইতে সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংকে স্থানান্তরিত হইত। এবং প্রজাগণ নির্বিঘ্নে স্বীয় প্রয়োজনানুসারে ব্যাংকের সহযোগিতায় অর্থের আদানপ্রদান করিত।
শারদীয়া পূজার প্রাক্কালে বোনাসপ্রাপ্তি কালক্ষণে স্বৈরাচারী রাণীর চপলতার জন্য রাজকোষাগার হইতে প্রজাগণের নিমিত্ত অর্থাদি স্থানান্তরণ বিঘ্নিত হইলে বঙ্গবর্ষের রাজশ্রমিকদিগের বোনাসপ্রাপ্তিকাল বিলম্বিত হইয়া যায়। অবশেষে শারদপঞ্চমীপূজা তিথিতে রাজকোষাগার হইতে পরিমিত অর্থ স্থানান্তরিত হইলেও সমগ্র ভূভারতে উক্ত দিবসে বায়বীয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হইলে যন্ত্রাদি অচল হইল ও ব্যাংক সংস্থা রাজশ্রমিকদিগকে বোনাস অর্থ হস্তান্তরণে অক্ষমতা প্রকাশ করিয়াছিল।  
অস্থিরমতি ও মিথ্যাচারী রাণী মমতা ইহাতেও তাঁহার অবিবেচক মন্তব্য দ্বারা প্রজাগণকে ভ্রমিত করিবার প্রচেষ্টারতা ছিলেন। কথিত আছে যে শ্রমিকগণ স্বীয় অধিকার রক্ষার্থে ও ভারতবর্ষের সমগ্র উন্নতিসাধনের নিমিত্ত সিপিএম জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন উপগোষ্ঠীকে সমর্থন করিত। হিংসাপরায়ণ রাণীর ইহাতে চক্ষুশূল ছিল। মিথ্যাচারী ও কুবিবেচক রাণী মমতা ব্যাংককর্মী উপগোষ্ঠীকে দূষিত করিয়া কহিয়াছিলেন যে তাঁহাকেই অপদস্থ করিবার জন্য উক্ত উপগোষ্ঠীটি ষড়যন্ত্র করিয়া রাজশ্রমিকদিগকে বোনাস হইতে বঞ্চিত করিয়াছে।
সেই সময়ে ভারতবর্ষে সপ্তাহের ষষ্ঠীতিথিকে শনিবার এবং তাহার অগ্রজ তিথিকে রবিবার বলা হইত। রবিবার সমগ্র শ্রমিকদিগের অবকাশদিবস গণ্য হইত। বায়বীয় সংযোগ বিঘ্নিত হইবার ফলস্বরূপ শনিবারে ব্যাংক কার্যাদি বাধাপ্রাপ্ত হইলে অবকাশদিবস রবিবার অর্থাৎ শারদষষ্ঠী তিথিতে ভারতবর্ষে উক্ত সংস্থার সমস্ত শাখায় ব্যাংকশ্রমিকবৃন্দ অন্যান্য কর্মদিবসের মতোই সাধারণ কার্যাদি পরিচালনা করিয়া প্রজাগণের দুঃখ লাঘব করিয়াছিল। আহ্লাদিনী রাণী এইরূপ পরিশ্রুত হইয়া স্বীয় গুণগান একটি সারমেয়বর্গীয় সংবাদমাধ্যমের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রচার করিয়াছিলেন। তিনি কহিয়াছিলেন যে প্রজাগণের বোনাস অপ্রাপ্তির সংবাদে অত্যধিক বেদনাকূল হইয়া ব্যাংক নৃপতিদিগকে তাহাদের দৈনন্দিন কার্যাদি অবকাশদিবসেও সচল রাখিতে আদেশ করিয়াছিলেন। রাজশ্রমিকগণের অসুবিধার কথা চিন্তন করিয়া তাঁহার ব্যথিত হৃদয় ক্রন্দনরতা হইলে তিনি উপযুক্ত কার্যদ্বারা তাহাদের কষ্ট লাঘব করিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন। রবিবারে শারদষষ্ঠী তিথিতে রাজশ্রমিকগণ বোনাসপ্রাপ্ত হইয়া খাদ্য ও বস্ত্রাদি ক্রয় করিয়া কিঞ্চিত সুখে শারদীয়া পূজায় সম্মিলিত হইয়াছিল।
সংবাদ নিত্যদিন নাম্নী একটি সংবাদমাধ্যম তাহাদের সারমেয়তার পরিচয় প্রকাশ করিবার নিমিত্ত শারদসপ্তমী তিথিতে তাহাদের সংবাদমধ্যমে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশিত করিয়াছিল। উক্ত মাধ্যমটি মিথ্যাচারী রাণীর স্তুতিগান ভজন করিয়া কহিয়াছিল “প্রজাদরদী রাণী মমতা প্রজাগণের দুঃখ ও দুর্দশা প্রশমিত করিতে তৎপর থাকিতেন এবং তাঁহার মহিমায় ব্যাংকগুলি অবকাশদিবসেও স্বাভাবিক কার্যাদি পরিচালনা করিতে বাধ্য হইয়াছিল। বঙ্গবর্ষে এহেন রাণীসম সুবিবেচক শাসক কদাপি আবির্ভূত হয় নাই।” মিথ্যাচারী রাণীর মিথ্যা বন্দনা করিয়া উক্ত সংবাদমাধ্যমটি সারমেয়সংবাদ রূপে গণ্য হইত। সেই কালে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের মিথ্যারটনা দ্বারা প্রজাগণ ভ্রমিত হইয়া ন্যায্য ও অন্যায্যের ভেদাভেদ ভুলিয়াছিল। ফলস্বরূপ বঙ্গবর্ষ চরম দুর্দশার কালগহ্বরে নিক্ষিপ্ত হইয়াছিল।
Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...
বাংলা ব্লগ জগতের সিন্ধুতে আমরাও একটা বিন্দু। নেট ঘেঁটো বাঙালির আপ্যায়ণে বড় হচ্ছে। শৌভিকের লেখা পড়তে এই ব্লগে যান LEKHASHAUBHIK.BLOGSPOT.COM