এপ্রিল মাসের শুরুতেই নোনাডাঙার বস্তিবাসীদের এপ্রিল ফুল করেছে বর্তমান সরকার। সরকার পরিবর্তনের আগে মমতার দলের নেতা জাভেদ খান ও ফিরহাদ হাকিম বস্তি উচ্ছেদ না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বস্তিবাসীদের ভাঁওতা দিয়েছিলেন। সরকারে এসে আগাম কোন নোটিশ না দিয়ে নিমেষের মধ্যে বস্তিবাসীদের মেরে তাড়িয়ে, ঘরবাড়ি ভেঙে সরকার তাদের আসল পরিচয় দিয়ে দিল। তাড়াতাড়ি উচ্ছেদ করার জন্যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল বস্তি এলাকায়। বস্তিটা অবশ্যই জবরদখল ছিল। কিন্তু বস্তিবাসীদের কাছে ভোট চাইতে এসে মিথ্যে কথা বলা উচিত হয়নি। বস্তি উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের কোন পরিকল্পনাও চোখে পড়েনি। এপ্রিল মাসের শুরুতেই নোনাডাঙার বস্তিবাসীরা মমতার দলের নেতাদের আশ্বাসের কাছে বোকা হয়ে গেলেন। এপ্রিল ফুল। মানবিকতাবিহীন সরকারের কাছে এইসব কিন্তু ছোট্ট ঘটনা।
এরপর পরিবেশ অশান্ত। এককালে যারা নন্দীগ্রামের ফন্দিতে মমতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে ‘লড়াই’ চালাত আজ তাঁরা নোনাডাঙায় এসে হাজির। তবে মমতা নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। কারণ নন্দীগ্রামের ফন্দিতে মমতার রাজনৈতিক সাহায্য এরা পেয়েছিলেন। এইবার কিন্তু কোন রাজনৈতিক সাহায্য এরা পাচ্ছেন না। তাই নন্দীগ্রামের মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারবেনা। মমতা বৃথাই ভয় পেয়ে আন্দোলনকে পুলিশের জুজু দেখিয়ে দমিয়ে দিতে চাইছেন। বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের পূর্বপ্রুতিশ্রুতি মতো কাজ করে দেখাতে পারলেই আন্দোলন প্রশমিত হয়ে যাবে। রাজনৈতিক সাহায্য বা ষড়যন্ত্র না থাকলে নোনাডাঙাকে নন্দীগ্রাম বানানোর যাবেনা তাই মমতার এই মুহূর্তে ভয় না পাওয়াই উচিত।
বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশি অত্যাচারের কথাও শোনা যাচ্ছে। নোনাডাঙায় বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে পুলিশ এলোপাথারি লাঠি চালিয়েছে। মহিলা পুলিশ না নিয়ে এসে বিক্ষোভ মিছিলের সামনে থাকা মহিলাদের লাঠির ঘা খেয়ে আহত হতে হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। শিশু এবং বৃদ্ধরাও পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হলেন। বেশ কয়েকটি কমিটি এবং সমিতি মিলে আবার নন্দীগ্রামের মতো ছক কষে বাংলাকে অশান্ত করতে চাইবে। নোনাডাঙা তারই ইঙ্গিত বহন করছে। তবুও মমতার ভয়ের কারণ নেই। কারণ উগ্র আন্দোলন করার জন্যে রাজনৈতিক মদত এই দলগুলিকে একমাত্র মমতাই দিতেন। আজ তাই বিভিন্ন কমিটি ও সমিতির পাশে আগুন লাগানোর মতো কেউ নেই। আগুন উসকে দেওয়ার মতো কেউ নেই। তাই মমতার ভয় পাওয়ার দরকার নেই।
নিজেকে বাঘের বাচ্চা বলেন তিনি। তিনি পুলিশ লেলিয়ে মানুষের সরকার বিরোধী আন্দোলন থামাতে চেষ্টা করেন। তিনি তাঁর দলের লোক লেলিয়ে আন্দোলনকে থামাতে চেষ্টা করছেন। গ্রন্থাগারে সংবাদপত্রের ওপর ফতোয়া জারি করে তিনি পাঠকদের অধিকারের ওপর হামলা করেন। তাঁর দলের লোকেরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করে। তিনি বাঘের বাচ্চা। বাঘেদের আর যাই থাকুক, বোধ বুদ্ধির বড়ই অভাব। তাদের ক্ষিদে লাগলে স্বাভাবিক অভ্যাসের বশে তারা তাদের খাদ্যের ওপর হামলে পড়তে পারে। এইটাই তাদের বুদ্ধি। মমতার এখন ক্ষিদে পেয়েছে। তাই তিনি মানুষের ওপর হামলা করছেন। তাঁর ক্ষিদে বাড়লে হামলা আরও বাড়বে। দলে দুষ্কৃতী ও চোরের তো অভাব নেই। মমতার দলের অনেক নেতাই প্রকাশ্যে দলের চোর ও দুষ্কৃতীর উপস্থিতি স্বীকার করেন। মমতার বাঘের মতো হামলা দেখে তাই মমতার দলের চোরেরা মানুষের ওপর হামলা বাড়াচ্ছে। দুষ্কৃতীরা খোলাখুলি মানুষের আন্দোলনের ওপর হামলা করছে। নোনাডাঙায় আজ তাই হয়েছে। পুলিশ নীরব দর্শক। পুলিশ এখন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের মতো মুক ও বধির।
নোনাডাঙায় তাদের এককালের বন্ধুস্থানীয় এপিডিআর-এর কর্মকর্তাদের ওপর তৃণমূলীদের হামলা দেখলেই বোঝা যায় মমতা ভীতুর ডিম। বাঘ একমাত্র মানুষের বাচ্চাকেই ভয় পায়। মমতা নামক বাঘের বাচ্চাটি নিজের সমালোচনাকে ভয় পান। তিনি সংবাদপত্রকে ভয় পান। তিনি মানুষের ন্যায্য দাবিকে ভয় পান। তিনি মানুষকে ভয় পান। তবুও আবার বলি, ভয় নেই। নোনাডাঙায় আরেকটি নন্দীগ্রামের ফন্দি একমাত্র রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থাকলেই হওয়া সম্ভব। বস্তিবাসীদের পুনর্বাসনের দাবি নিয়ে স্বল্প উগ্র আন্দোলনকে মুগুর মেরে ঠান্ডা না করলেই ভাল।